Google how to see india

পরাক্রমশালী ভারতের অভ্যন্তরীন দৈন্যতা স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে গুগলের এই চিত্রে।

বহির্বিশ্বে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিতে মাথা উঁচু করে দাড়াবার প্রচেষ্ঠায় লিপ্ত এই দেশটির প্রায় ৬০ ভাগ লোক প্রতিদিন খোলা জায়গায় মল ত্যাগ করে। মোট জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ ৩ বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খায়। অনেক প্রদেশে আবার অভাবে ভিক্ষা পাওয়াও দায়। 

বিশ্বের ধনী ব্যাক্তিদের মধ্যে ভারতীয় কয়েকজনের নাম উঠে আসা নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করার কিছু নেই। এর সুফল থেকে সবসময়ই বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভারতীয়গন। ভারত মেধা এবং আন্তর্জাতিক বানিজ্যে যথেষ্ট সফল এবং জোড়েশোড়েই আগাচ্ছে। তবে নাগরিকদের উঁচুনিচু পার্থক্যটা এখানে খুবই প্রকট।

সাংস্কৃতিতে ভারত এখন খুবই মুক্তমনা। আদর্শ নারী সানি লিওন আদর্শী বর্ণাঢ্য চলচিত্র ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসীর দেশে এখন পত্রিকার খবর হয় “গুজরাটের ৯৮ ভাগ বাবাই মিথ্যা”। সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যসব উদাহরন নাই বা দিলাম। তবে ভয়ের কথা এই হীন আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব ইতিমধ্যে আমাদের বদ-অনুকরন প্রিয় বাঙালী সমাজে বিস্তার লাভ করতে শুরু করেছে। আর আমরা ইতিমধ্যে হাতে হাতে ফল পেতে শুরু করছি। বিষয়টি ভেবে দেখার এখনি সময়। অন্যথায় কিছু দিন পর হয়ত কোন এক বিশেষ রাস্তার মোড়ে দাঁড়ালে শুনতে পাব অতি আধুনিক ছেলে আন্দোলনের মাঠ থেকে মা’কে ফোন করে বলছে ‘মা আমার জন্য দোয়া করো, তোমার ছেলে যেন অন্যের বউ হতে পারে সেই অধিকার আদায়ের জন্য অনশন করছে, আন্দোলন করছে’। যাদের পূর্বসূরীরা ইতিমধ্যে পাশ্চাত্যে অনেকাংশে সফল হয়েছে।

প্রকৃত মাথাপিছু অর্থনীতিতে আমরা দৃশ্যত দক্ষিন এশিয়ায় যথেষ্ট এগিয়ে আছি। ভারতের সাথে আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকদের মাথা পিছু প্রকৃত আয়ের একটা তুলনা শুধু এভাবে করব যে আপনার আশেপাশে থাকা একটা বাংলাদেশী ভিক্ষুক খোঁজে বেড় করে তার মাসিক আয় কত জিজ্ঞেস করুন। হিসেবের অংকটা ১০ হাজারের নিচে নামবে না। 

আমি ৭-৮ বছরের একটা বাচ্ছাকে ডেকে নিয়ে তার ভিক্ষার থলের টাকা গুনে দেখি তাতে ২৪৫ টাকা আছে। সে পার্ট টাইম ভিক্ষুক এটা তার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপার্জন আর সন্ধার আগে সে আরও প্রায় তিনশত টাকা ঘরে রেখে আসছে বলে আমাকে জানায়।

আন্তজার্তিক বানিজ্য ও মেধায় ভারতের তুলনায় আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। এর মূল কারন আমাদের সময় অনুপযোগী বানিজ্য নীতি, বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা, মুদ্রানীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জবাবদিহিতার অভাব।

বাংলাদেশের গ্রামগুলি যতটা সচ্ছল ভারতের গ্রামগুলি ততটাই অসচ্ছল। পার্থক্য শুধু এটাই ১৫০ কোটি ভারতীয় নাগরিকের রক্ত চুষে বিশাল ভূ-খন্ডের ভারত সরকার আজ অনেক ধনী, জনগনকে না খাইয়ে রেখে সেই টাকায় পরমানু বোমা বানায় আর অপরদিকে ১৬ কোটি বাঙালির উপর পাহাড়সম করের বোঝা চাপিয়ে বাংলাদেশ সরকার দূর্নীতির পায়ে ভর করে কচ্ছপের মত হেলেদুলে চলছে। তবে দেশের জনগন কখনোই অনাহারে নেই। 

তারপরও আমরা আনন্দিত এবং আশাবাদী কারন ঐতিহ্যগত স্বাধীনচেতা রক্তের অধিকারী সফল বাঙালী হিসেবে আমরা পেয়েছি স্বাধীন ও সার্বভৌম ভূ-খন্ড। যার নাম বাংলাদেশ। ধীরে হোক আর জোরে হোক এ দেশ একদিন সোনার বাংলাদেশ হবেই.....আর সেদিন বেশি দূরে নয়...

লেখক পরিচিতি
এম, এইচ, মিনহাজ
আমি বিভিন্ন বাংলা/ইংরেজী ব্লগের একজন অনিয়মিত এবং সখের ব্লগার। তবে নিয়মিত লেখার ইচ্ছে থাকলেও অনিয়মিত ভাবেই পাঠকদের বিরক্ত করে থাকি। আমার লেখার বিষয়বস্তু- যা মনে আসে তাই। কারও কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার জন্য লিখি না। কেউ আমার লেখা পছন্দ করলে খুশি হই তবে অপছন্দ করলেও লেখালেখি বন্ধ করার কোন অবকাশ নেই, কারন আমি একান্ত সখের বশেই লেখালেখি করি।
আমার ব্লগ সমুহ: