ISIS militants 

বনের সাপে ছোবল দিলে বিষের ব্যাথা শুধু গায়ে ছড়ায়।

পালা (পোষা) সাপে ছোবল দিলে বিষের ব্যাথা একই সাথে গায়ে এবং মনেও ছড়ায়।

আইসিস (ISIS)কে সাপ হিসেবে সৃষ্টি করেছে বৃটিশ-আমেরিকা ও ফ্রান্সের ন্যাটো জোট। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু মুসলমানদেরকে বিভক্ত করা আর তাদের তৈরী বিপথগামী মুসলীমদের সংস্থা আইসিসকে নায়ক ও অন্য পক্ষগুলিকে খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে সাধারন মুসলমানদের ইসলামিক সন্ত্রসী হিসেবে উপস্থাপন করতে বিশ্বমিডিয়া গুলির খোরাক জোগানো। এবারেও তাদের প্রচেষ্ঠা ভেস্তে গেল মাঝ পথেই। এখন তাদের সৃষ্ট ও পোষা সাপ ISIS পোষক ন্যাটো জোটকেই ফনা তুলে বিষাক্ত ছোবল দিচ্ছে।

 

চলুন আমেরিকা ও ন্যাটোর সাপ খেলা সংক্রান্ত আমলনামার কিছু খণ্ডচিত্র দেখে নেই:

 

১. ১৯৪৮ সালে ইসরাইলকে তৈরী করেছে বৃটিশ-আমেরিকা যা সৃষ্টি থেকেই মুসলিম জাতি, মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বের গলার কাঁটা হয়ে টিকে আছে।

২. মিশরের প্রেসিডেন্ট হুসনি মোবারককে তৈরী করেছিল আমেরিকা যে সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইসরাইলের সর্বাত্বক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

৩. সারা বিশ্বে আমেরিকা গনতন্ত্রের গলাবাজি করলেও সৌদি আরবে তারা নীরব। কারন সৌদি রাজপরিবার আমেরিকানদের পোষা পুতুল ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলে ঘনিষ্ট মিত্র। আর সৌদিই মধ্যপ্রাচ্য সহ সমগ্র মুসলিমদের নিয়ন্ত্রনের নিরাপদ আমেরিকান ঘাটি হিসেবে ব্যাবহৃত হয়ে আসছে।

৩. ইরানকে ধ্বংস করার জন্য ইরাকের সাদ্দাম হোসেনকে ঐসময়ের আধুনিক অস্ত্র দিয়ে তৈরী করেছিল আমেরিকাই। যার ফলশ্রতিতে ১৯৮০ সালে শুরু হয়েছিল ইরাক-ইরান যুদ্ধ। যেই সাদ্দাম হোসেন ১৯৯০ সালে কুয়েত দখলের মধ্য দিয়ে আমেরিকার দিকেই ফনা তুলেছিলেন।

৪. লাদেন নামক চরিত্র এবং তালেবান বা আল-কায়দা নামক নাটক তৈরী করেছিল আমেরিকাই। লাদেন একসময় আমেরিকার ঘনিষ্ট মিত্র ছিল। আর সেই লাদেন নামক সাপ মারার অজুহাতেই ২০০১ সালে বিপর্যয় ঘটানো হল আফগানিস্তান তথা সারা মুসলিম বিশ্বে।

৫. রাশিয়ার একসময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারতকে ঠেকাতে পাকিস্তানকে সাপ হিসেবে তৈরী করতে চেয়েছিল আমেরিকা। সেই প্রচেষ্ঠাতেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরী বানাতে পাকিস্তানের পক্ষে ৭ম নৌবহর প্রেরন করেছিল সভ্যতার মুখোশধারী আমেরিকা।

৬. ২০১২ সাল থেকে সিরিয়ার আসাদ সরকারকে হঠাতে আধুনিক আমেরিকান সমরাস্ত্র দিয়ে সাজিয়েছে তাদের তৈরী সর্বশেষ সাপ ISIS কে। আর সেই আইসিস ই আজ আমেরিকান ন্যাটোর দিকে ফনা তুলেছে। আর তাদের দেয়া মারনাস্ত্র গুলি আজ তাদের গলাতেই কাঁটা হয়ে বিধছে। 

 

আমি দ্বিধায় পরে যাই এজন্য যে, হীন উদ্দেশ্যে পোষা সাপ যখন পোষককেই ছোবল দেয়, তখন কি তার নিন্দা জানানো উচিত? এই হত্যাকান্ডের জন্য কি আমাদের শোক প্রকাশ করা উচিত?

এরা তো সাপ নিয়েই খেলা করে আসছে, এখনো খেলতেছে এমনকি ভবিষ্যতেও সাপ খেলা খেলে যাবে।

 

তবে আমার কষ্ট হয় এজন্য যে, হীন রাজনৈতিক ও আগ্রাসী বিশ্বশক্তি জোটের পৃষ্ঠ পোষকতায় সৃষ্ট আল-কায়দা, আইসিস নামক সাপের বিষাক্ত ছোবলে ও এদেরকে দমনের নামে আইওয়াসে ও বিশ্বশক্তির প্রতিযোগীতার ষ্টীম রোলাররের নীচে চাপা পরে মরছে শত নয়, হাজার নয় বরং লাখো নিরীহ মানুষ।

 

১৩ই নবেম্বর ফ্রান্সের পেরিসের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবর্ষন ও বোমা হামলায় দেড়শতাধিক নিরীহ লোক নিহত হয়েছেন। হামলাকারী সংঘটনের নাম ISIS. যেই ISIS কে ফ্রান্স ও তার জোট কোটি ডলারের সমরাস্ত্র দিয়ে তৈরী করেছে মানুষ হত্যা করার জন্যই। তবে ISIS মানুষই হত্যা করেছে তবে স্থান নির্বাচনের একটু এদিক সেদিক হয়ে গেছে অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে ISIS তাদের পোষক ফ্রান্স ও ন্যাটোকেই তালিকাভুক্ত করে ফেলেছে। এটাই শক্তিধর জোটের মাথাব্যাথার মূল কারন।

 

আমি ISIS সহ সকল ধরনের সন্ত্রসী হামলার নিন্দা জানাচ্ছি ও শোক প্রকাশ করছি। 

 

তবে আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন পোষকের বিরুদ্ধে, বিষধর ফনা তুলে ন্যাটোর সৃষ্ট বিশ্বের ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ ইসরাইল মহাবিশ্বের ত্রাস হয়ে জেগে উঠবে।

শুধু সেই দিনই রক্তের নদীতে আনন্দের নৌকা চালাবে সত্যিকারের মানবতা। সেই দিন  আর বেশি দূরে নয়। আগমনের ঘন্টা ধ্বনি বাজছে। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টাতে উল্টাতেই চলে আসবে সেই কাঙ্খিত দিন।

 

লেখক পরিচিতি
এম, এইচ, মিনহাজ
আমি বিভিন্ন বাংলা/ইংরেজী ব্লগের একজন অনিয়মিত এবং সখের ব্লগার। তবে নিয়মিত লেখার ইচ্ছে থাকলেও অনিয়মিত ভাবেই পাঠকদের বিরক্ত করে থাকি। আমার লেখার বিষয়বস্তু- যা মনে আসে তাই। কারও কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার জন্য লিখি না। কেউ আমার লেখা পছন্দ করলে খুশি হই তবে অপছন্দ করলেও লেখালেখি বন্ধ করার কোন অবকাশ নেই, কারন আমি একান্ত সখের বশেই লেখালেখি করি।
আমার ব্লগ সমুহ:

আপনার মতামত দিন