আমার জীবনে পিতামাতার পর যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হচ্ছেন কর্ণেল শাপলা।পুরো নাম কর্ণেল নাহিদ রিয়াজ শাপলা classified spl in obs & gynae MBBS,MCPS,DGO,FCPS( obs& gynae),,FELLOW IN MFM(Singapore) চিকিৎসা  শাস্ত্রের অসামান্য ডিগ্রী অর্জনের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা তেও রেখেছেন অসামান্য অবদান। সেনাবাহিনীর সাধারণ সৈনিকদের খুব পছন্দের একটা মানুষ।  দেখলেই মায়ের মত শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে প্রাণটা।আমি ইনফেন্ট্রীর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, কর্ণেল পদবীর অফিসারদের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ খুবই কম।আমাদের নিকট উনারা ভি আই পি মর্যাদার।আমার স্ত্রী অত্যান্ত অসুস্থ হয়ে যশোহর সি এম এইচ কর্ণেল শাপলা স্যারের নিকট চিকিৎসা নিচ্ছিল।খুব যত্নের সাথে পরিক্ষা নিরিক্ষা করছিলেন,সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নিল অপারেশন করতে হবে।আমারা পারিবারিক ভাবে অপারেশনের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।আমি তখন রাংগামাটির বুড়িঘাট ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার। আমার স্ত্রী তখন বিষয়টি আমাকে জানালেন,আমি সিনিয়র, জুনিয়র সবার কাছে পরামর্শ নিতে সবার একটাই কথা শাপলা ম্যাডাম খুব ভালো মানুসীকতার ডাক্তার। অপারেশনে উনার অনেক সুনাম আছে আপনি ভাবির অপারেশন করান।অপারেশনের সব প্রস্তুতি নিতেই শুরু হলো ক্রোনার আগ্রাসন।যশোরের অপারেশন বন্ধ। আর অপারেশন হলোনা।আমার রোগীর অবস্থাও দিন দিন অবনতির দিকে,হঠাৎ শুনতে পেলাম ম্যাডামের ঢাকাতে পোস্টিং,আমার মাথায় বজ্রাঘাতের মত।যশোরে ঐ সময় শাপলা ম্যাডামের সাথ জুনিয়র অনেক ডাক্তারই ছিলেন,আমার স্ত্রী শাপলা ম্যাডামের রোগী হবার কারনে উনারা যে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেননা এটা অনুধাবন করতে পারছিলাম, রেহনুমা নামে একজন ডাক্তার তো বলেই ফেললেন আপনি শাপলা ম্যাডামের রোগী আপনি ঢাকাতে যান,আমার স্ত্রী বললো তাহলে আমাকে ঢাকাতে শেফার্ড করেন,তাও করেনা,হতাশ হলাম,আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইলাম। ঢাকাতে আমার এক সৈনিক ছিল নাম আব্দুস সাত্তার, ওকে বললাম কর্ণেল শাপলা ম্যাডামের মোবাইল নম্বরটা আমাকে জোগাড় করে দাও,সে একদিন পরেই আমাকে নাম্বারটা দিল।এদিকে করোনার প্রকোপ তুঙ্গে,সেনানিবাসে রেড এলাট চলছে।মনে আছে তখন চলছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস,শাপলা ম্যাডামকে ফোন দিলাম,পরিচয় দিয়ে কথা বললাম, একজন কর্ণেল এত সাদা মনের হতে পারে ভাবতে পারিনি,২৯ বছরের চাকরিতে দেখেনি।আমাকে বললেন যশোরে এত মানুষের অপারেশন করলাম আপনি করায় নিতে পারলেননা,যাক এখন করনের সময় ওটি বন্ধ, আপনি আপাতত ঔষধ খাওয়ান আর মার্চ মাসের প্রথম দিকে ফোন দিবেন,ওটি খুললেই নিয়ে আসবেন অপারেশন করে দেবো।কবে করোনা যাবে,কবে ওটি খুলবে,কবে মার্চ মাস আসবে,কবে অপারেশন হবে সবই অপেক্ষা। আমার রোগীর অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে।

চলবে,,, লেখা


আপনার মতামত দিন