ভূমিকাঃ 

        জীবনের সমস্ত প্রসংসা মহান আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিমিত্তে,দরূদ ও সালাম বিশ্ব মানবতার সর্বশেষ পয়গাম্বর মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এবং সাহাবায়ে কেরাম আজমাইন রাঃ এবং আহলে বাইতের উপর।মুসলিম উম্মাহর ভিতর সালাত বা নামাজরে ফরজ ওয়াজীব নিয়ে মতাদ্বন্দ না থাকলেও সালাত আদায়ের কিছু সুন্নাহ নিয়ে তাবেঈন রঃ হতে যুগ যুগ পযর্ন্ত মতভেদ চলে আসছে এবং প্রত্যেকটা মতভেদের পক্ষে হাদিসের দলিল আছে।এই মতভেদ সমুহের সাথে সম্পৃক্ত হাদিস সমুহের মধ্যে যে সমস্ত হাদিসের রাবীদের ফেকাহের জ্ঞান বেশি এবং যে সমস্ত হাদিসের উপর ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর রাঃ এবং উমর রাঃ এবং বিখ্যাত ফোকাহা সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ এর আমল পাওয়া যায় হানাফী মাযহাব মূলত সেগুলোর উপরেই আমলের জোর দিয়েছেন পাশাপাশি অন্যান্য সাহাবীদের সহিহ হাদিসের আমল ও গ্রহন করে। রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সালাতের ক্ষেত্রে হাদিসের উপর উম্মতের কয়েকজন পন্ডিতকে আল্লাহ এমন তৌফিক দান করেছেন যে, সালাত সংক্রান্ত সব সহিহ হাদিসগুলো নিয়ে এমন ভাবে তিনারা গবেষনা করেছেন যে তা চারটি পদ্ধতির মধ্যে চলে এসছে।সহিহ হাদিস মোতাবেক যে যেভাবেই সালাত আদায় করুক তার সালাত ঐ চার নিয়মের যেকোন এক নিয়মের মধ্যে পড়ে যাবে।যদিও কিছু মানুষ মিথ্যা দাবী করে যে, আমরা মাযহাব মানিনা।সম্প্রতি সময়ে উম্মতের ভিতর ফেৎনা সৃষ্টি এবং উম্মতকে আমল শূন্য ও আল্লাহর নিকট মানুষ যাতে তার আকুতি পেশ হতে বিরত থাকে সেই লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের জন্য আর্ন্তজাতিক ভাবে ষড়যন্ত্র নেক সুরতে উম্মতের ভিতর প্রবেশ করেছে।তারা একমাত্র বোখারী শরীফকেই সহীহ হাদিস মনে করে।বোখারীর হাদিস সংখ্যা ৭১৭৫ এবং বোখারী আবিস্কার হয়েছে রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবাদের খেলাফতে রাশেদার ৪০ হিজরী পযন্র্ত হাদিসের কোন গ্রন্থের প্রয়োজন হয়নি সর্বশেষ সাহাবী তোফায়েল রাঃ এর ইহধাম ত্যাগের(১০২)হিজরী পযন্র্ত ও কোন হাদিস গ্রন্থ ছিলনা।বোখারী শরীফ লেখা শেষ হয়েছে ২৩৩ হিজরীত আরো ৫বছর লেগেছে সংকলন করতে,আরো কয়েক বছর লেগেছে মানুষের হাতে পৌছাতেেএই যে দীর্ঘ্য একটা সময় তাবেঈ তাবে তাবেঈনদের মাঝে তো বোখারী ছিলনা তাহলে তিনারা কি সহীহ হাদিসের উপর আমল করেননি?অবশ্যই করেছেন।রাসুলের সাঃ জীবনের লক্ষ লক্ষ সহীহ হাদিসের মধ্যে ইমাম বোখারী রহঃ তিনার নিকট ও মুখস্ত ছিলো ৬ লক্ষ হাদিস তার ভিতর হতে মাত্র ৭১৭৫টি হাদিস এনেছেন তাহলে বাকী সহীহ হাদিস গুলো কোথায়?ইমাম বোখারীর বাকী সব হাদিস গুলো জাল বা সহীহ নয় এমন নয়,ইমাম বোখারী ছিলেন শাফেয়ী এবং মালেকী মাযহাব মতালম্ ইমাম তাইমিয়া রহঃ বলেন তিনি হাম্বলী মাযহাবের ও অনুস্বরন করতেন, এই জন্য বোখারীর ভিতর তিনি শাফেয়ী হাম্বলী এবং মালেকী মাযহাবের দলিলগুলো তিনি বেশি এনেছেন।এটা প্রতিটা মানুষের স্বভাবজাত একটা নিয়ম যে,মানুষ যেটার উপর চর্চা বেশি করবে সেইটা লিখতে তার কলম আগে প্রস্তত থাকবে,বোখারী শরীফের বেলায় ঠিক তাই ই করেছেন ইমাম বোখারী রহঃ।যদি ও ইমাম বোখারী রহঃ ছিলেন ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর ছাত্রের ছাত্।যাদের বোঝানোর জন্য কলেবরকে এত বড় করছি তারা হানাফি মাযহাবের যুব সম্প্রদায়। হানাফী মাযহাবের মত শক্তিশালী সহিহ হাদিসের আমল হতে দূরে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছে।বর্তমান  সময়ে  এসে  আমাদেরকে  একটা জিনিস  মোথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে পাশ্চাত্যবাদীদের   ঈমান বিধ্বংসী  ক্রুসেড পরিকল্পনা।সামনা সামনি মুসলমানদের   সাথে  যুদ্ধে  পরাজিত হয়ে তারা মুসলমানদের আসল হাতিয়ার আবিস্কারের পথ খুজে পাই,এবং মুসলমানদের নিকট হতে এই হাতিয়ার ছিনিয়ে নিতে পারলেই মুসলমানেরা আর মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবেনা। সে হাতিয়ারের নাম হচ্ছে ঈমান।মুসলমানদের ঈমান  নষ্টের  যত ্পকরণ ছিলো  সবগুলো অতি   কৌশলে   তারা মুসলমানদের  হাতে   তুলে দিয়ে  ঈমান    নষ্ট   করতে  সক্ষম  সহয়েছে।মুসলমানদের এবাদতের   ভিতর ইমান  রক্ষার  যে  চাবীকাঠি  ছিলো  সেই এবাদতের ভিতরেও  নেক সুরতে ভেজাল ঢুকানোর জন্য  পাশ্চাত্যবাদীরা মুসলমানদের  বিশ্বস্থ সুন্নাহ সমুহের   কিতাব যেমন,বোখারী  ,মুসলিম,আবু  দাউদ,তীরমিযি,নাসাঈ  ইবনেমাজা এই সমস্ত কিতাবগুলো আজ তাদের ছাপা খানায় ছাপাচ্ছে  এবং সুকৌশলে ভিতরে শাব্দিক পরিবর্তন করছে।কোনটা আসল আর কোনটা নকল আলেম ছা্ড়া নির্ণয় করনা জাতির জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।যুবকেরা নিজ ভাষায়  এর অনুবাদ পড়ে দিন দিন আলেম উলামাদের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে।আসলে ঐ যুবক কি জানে সে কাদের ছাপানো কিতাবের অনুবাদ পড়ছেেএটা কি আসল বোখারী না পাশ্চাত্যবাদীদের লেখা বোখারী বুঝতে হলে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে পড়তে হবে।আমরা কিয়ামতের খুব নিকটবর্তী যেকোন বিষয় সামনে আসলে অবশ্যই যোগ্যতার নিরিখে তা যাচাই  করে গ্রহন করতে  হবে।যাচাই বাছাইতে   আমরা  ব্যর্থ হয়েছি,আর এর পিছনে সব চাইতে বড় কারণ হচ্ছে হানাফী মাযহাবের দলিল সমুহ উম্মতের নিকট উপস্থাপনে আমরা উলামা সমাজ ব্যর্থ হয়েছি।বিশেষ করে এদেশের তৌহিদী জনতার প্রানের স্পন্দন যুব সমাজকে টার্গেট করে এক শ্রেনী হানাফী মাজহাবের দলিলকে লুকিয়ে রেখে তাদের মতবাদের বই তাদের ঘাড়ে চাঁপানোর  কাজ করে যাচ্ছে এবং কিছুটা সফল ও হচ্ছে শুধুমাত্র হানাফী মাযহাবের দলিল না জানার কারণে। এই গ্রন্থে শুধুমাত্র হানাফী মতালম্বীদের সালাতের জন্য যে সমস্ত শক্তিশালী দলিল সমুহ আছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।আমরা কেউ মানবীয় ভূলের উর্ধে না,আমার আলোচিত দলিল ছাড়াও যদি  কোন শক্তিশালী দলিল হানাফী মাজহাবের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থেকে থাকে এবং আমার লেখায় কোন ত্রুটি বিচ্যুতি হয় তবে তা উল্লেখের অধিকার যে কোন উলামা হযরত রাখেন।আমাকে জানালে আমি তা উল্লেখ পূর্বক পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করবো ইনশাআল্লাহ।এই গ্রন্থটি উম্মতের হাতে পৌছালে উম্মত অবশ্যই জানতে পারবে যে হানাফি মাজহাবের দলিল কত শক্তিশালী,তাহলে তারা আর বিভ্রান্ত হবেনা বলে আমি আশাবাদী।

আরজ গুজার 

 

এম এম আব্দুল হান্নান 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সালাত বা নামাজ সম্পর্কে কিছু অগ্র কথা:

     

 

  সালাত উইকিপিডিয়াতে সালাত সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে যে,   নামায  ফার্সি: نَمازশব্দ, সালাত বা সালাহ  আরবি الصلوة আস-সালাহ, আরবি শব্দ  ٱلصَّلَوَات  আস-সালাওয়াত, অর্থ "প্রার্থনা", "দোয়া",  বা "প্রশংসা, নামাজ ইসলাম ধর্মের প্রধান উপাসনাকর্ম। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নির্দিষ্ট নামাযের নির্দিষ্ট সময় নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আবশ্যক বা ফরজ। নামায ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।

নামায শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত ফার্সি: نماز এবং বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত একটি শব্দ যা আরবি ভাষার সালাত শব্দের আরবি: صلاة, কুরআনিক আরবি:صلاة, প্রতিশব্দ। বাংলা ভাষায় 'সালাত'-এর পরিবর্তে সচরাচর 'নামাজ' শব্দটিই ব্যবহৃত হয়। ফার্সি, উর্দু, হিন্দি, তুর্কী এবং বাংলা ভাষায় একে নামায (ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত  বলা হয়। কিন্তু এর মূল আরবি নাম সালাত একবচন বা সালাওয়াত   বহুবচন। "সালাত" -এর আভিধানিক অর্থ দোয়া, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা ইত্যাদি।পারিভাষিক অর্থ: ‘শরী‘আত নির্দেশিত ক্রিয়া-পদ্ধতির মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে বান্দার ক্ষমা ভিক্ষা ও প্রার্থনা নিবেদনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদতকে ‘সালাত’ বলা হয়, যা তাকবিরে তাহরিমা দ্বারা শুরু হয় ও সালাম ফিরানো দ্বারা শেষ হয়’।

 

<h4>সালাত বা নামাজের ইতিহাস</h4>

 

সালাত বা নামাজশুধু মাত্র এই উম্মতের সময়  হতে শুরু হয়েছে বিষয়টি এমন না,এই উম্মতের পূর্ববর্তী নবী  আঃএবং উম্মতদের

প্রতিও নামাজ নির্ধারিত ছিলো।বর্ণিত আছে, হজরত আদম (আ.) যখন দুনিয়ায় পতিত হলেন তখন আসরের ওয়াক্ত ছিল। দেখতে দেখতে সূর্য লাল বর্ণ ধারণ করল এবং ধীরে ধীরে ডুবে গেল। সমগ্র পৃথিবী অন্ধকারে নিমজ্জিত হলো। হজরত আদম (আ.) ছিলেন জান্নাতে। সেখানে অন্ধকারের নামগন্ধও ছিল না। সুতরাং তিনি জীবনেও কোনো দিন অন্ধকার দেখেননি। এবার তিনি অন্ধকারে ভয়ঙ্কর রকমের ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গেলেন। আর এ অন্ধকারের মধ্যে ভয়ানক জীবজন্তুর ভীষণ তর্জনগর্জন শুনতে পেলেন। ভয়াবহ অন্ধকারে সারা রাত কাটালেন। ভোরে সূর্যোদয় হলো। তা দেখে আদম (আ.)-এর মনে আশার সঞ্চার হলো। হজরত জিবরাইল (আ.) এসে আদম (আ.)-কে জাগ্রত করে সুবহে সাদিকের সুসংবাদ দিলেন। বললেন হে আদম! উঠুন, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। দেখুন অন্ধকার গত হয়ে সূর্য উদয় হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে হজরত আদম (আ.) দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন। এক রাকাত সেই ভীষণ অন্ধকার দূরীভূত হওয়ার কারণে আর এক রাকাত দিনের আলো প্রকাশ হওয়ার কারণে। এটি মানবজাতির প্রথম নামাজ ছিল; যা আদম (আ.) একসঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন। জনৈক আনসারি সাহাবি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! ফজরের নামাজ সর্বপ্রথম কোন নবী পড়েছিলেন? প্রতিউত্তরে তিনি বললেন, ফজরের নামাজ সর্বপ্রথম হজরত আদম (আ.) পড়েছিলেন। জোহরের নামাজ সর্বপ্রথম হজরত ইবরাহিম (আ.) পড়েছিলেন। যখন আল্লাহ তাঁকে নমরুদের অগ্নিকু- থেকে রেহাই দিয়েছিলেন। আসরের নামাজ সর্বপ্রথম হজরত ইয়াকুব (আ.) পড়েছিলেন। যখন জিবরাইল (আ.) তাঁকে স্বীয়পুত্র ইউসুফ (আ.)-এর সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন। মাগরিবের নামাজ সর্বপ্রথম হজরত দাউদ (আ.) পড়েছিলেন। যখন আল্লাহর দরবারে তাঁর তওবা কবুল হয়েছিল। ইশার নামাজ সর্বপ্রথম হজরত ইউনুস (আ.) পড়েছিলেন যখন তিনি মাছের পেট থেকে মুক্তিলাভ করেন। গুনিয়াতুত তালেবিন।

ইমাম তাহাবী শরহে মানিউল আসার কিতাবে নামাজের ইতিহাসটি আর একটু ভিন্নভাবে বর্ণনা করেন<br>

 

<b> [১] ফজরের নামায</b>: পয়গম্বর আদম (আ:)-এর স্মরণে

ভোরে (ফজরের ওয়াক্তে) পয়গম্বর আদম আলাইহিস্ সালামের তওবা যখন কবূল করা হয়, তখন তিনি দুই রাক’আত নামায (কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে) আদায় করেন; ফলে এটা ফজর ওয়াক্তের নামায হিসেবে পরিণত হয়।<br>

 

  <b>[২] যোহরের নামায:</b> পয়গম্বর ইবরাহীম (আ:)-এর স্মরণে

পয়গম্বর ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম দুপুরে তাঁর পুত্র পয়গম্বর এসহাক্ব আলাইহিস্ সালামের জন্ম দ্বারা আশীর্বাদধন্য হলে চার রাক’আত নামায আদায় করেন; ফলে এটা যোহর ওয়াক্তের নামায হিসেবে পরিণত হয়।<br>

 

  <b> [৩] আসরের নামায:</b> পয়গম্বর উযায়র (আ:)-এর স্মরণে

পয়গম্বর উযায়র আলাইহিস্ সালামকে এক ’শ বছর পরে পুনরুত্থিত করে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘কতোকাল তুমি এই অবস্থায় ছিলে?’ তিনি আরয করেন, ‘একদিন বা তার কিয়দংশ।’ অতঃপর তিনি চার রাক’আত নামায (শোকরানা) নামায আদায় করেন। এটাই ’আসর ওয়াক্তের নামায হিসেবে পরিণত হয়।<br>

 

  <b> [৪] মাগরেবের নামায:</b> পয়গম্বর দাউদ (আ:)-এর স্মরণে

বর্ণিত আছে যে সর্ব-পয়গম্বর উযায়র (আলাইহিস্ সালাম) ও দাউদ (আলাইহিস্ সালাম)-কে সূর্যাস্তের সময় ঐশী ক্ষমা মঞ্জুর করা হয়। তাঁরা চার রাক’আত নামায আদায় করার নিয়্যত করেছিলেন, কিন্তু (শারীরিক) দুর্বলতা বা ক্লান্তির কারণে তৃতীয় রাক’আত-শেষে বসে থাকেন (নামায পুরোপুরি সম্পন্ন করতে অক্ষম হয়ে)। ফলে এটা মাগরেব ওয়াক্তের নামায হিসেবে পরিণত হয়, যা তিন রাক’আতবিশিষ্ট।<br>

<b> [৫] ’এশার নামায:</b> মহানবী (দ:)-এর স্মরণে

’এশা’র নামায, যেটা দিনের সর্বশেষ প্রার্থনা, সেটা যিনি সর্বপ্রথম আদায় করেন তিনি হলেন আমাদের মহানবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম

ফরজ সলাত তরককারীর বা  পরিত্যাগকারীর  বিধান যা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রকার ওযর ব্যতীত অলসতা অবহেলা করে করা হয়:

 সর্বজ্ঞানী আল্লাহ্ তা'য়ালা কোরআন মাজীদে তার বান্দাদের সর্বাধিকবার সালাত কায়িম করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত বলেছেন। যেখানে সলাতের স্থান দ্বিতীয় স্তম্ভের মধ্যে রয়েছে ;সহীহুল বুখারীর ৮ নাম্বার হাদীস।

আর আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক আল-উকাইলী রাহি. বলেছেনঃ মুহাম্মাদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন সাহাবী সালাত ব্যতিত অন্য কোন আমল ছেড়ে দেয়াকে কুফুরী কাজ বলে মনে করতেন না, জামে'ঊত তিরমিযীর ২৬২২নাম্বার সহীহ হাদীস।<br>

অতঃপর মুসলিম উম্মাহর মাঝে সালাত অস্বীকারকারী কাফির হওয়ার উপর ইজমা সাব্যস্ত হয়েছে । পাশাপাশি এ সম্পর্কে আরেকটি মুসলিম উম্মাহর ইজমা হয়েছে যে, সালাত ত্যাগ করা মানে সালাত অস্বীকার করা ;ফিক্বহুস সুন্নাহর ১ম খন্ডের ৯২ নাম্বার পৃষ্ঠা।একজন মুসলমান যখন নামাজের  জন্য  চুড়ান্ত প্রস্তুতি  গ্রহন করবে  তখন প্রথমেই তাকে পোশাকের স্বরনাপন্ন হতে হবে,তারপর পবিত্রতা  এমনি ভাবে  ধারাবাহিক কিছু  কার্য্যক্রম সম্পন্ন  করে  সালাত  বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

  <h4>মেরাজের পূর্বে এই উম্মতের উপর নামাজ নির্ধারিত ছিলো কিনা?</h4>

  ঐতিহাসিক বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন।

 

এবং দীর্ঘ সময় পরে সূরা মু’মিন এর ৫৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় দৈনিক দুই ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য ফরজ (আবশ্যিক) হওয়ার নির্দেশনা লাভ করেন।

 

فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ

 

অর্থঃ অতএব, আপনি সবর করুন নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য।

 

আপনি আপনার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রর্থনা করুন এবং সকাল-সন্ধ্যায় আপনার পালনকর্তার প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন।

 

মোকাতেল ইবনে সোলায়মান (রহ.) বলেন, ইসলামের শুরুর দিকে মহান আল্লাহ দুই রাকাত নামাজ সকালে ও দুই রাকাত নামাজ সন্ধ্যার জন্য নির্দিষ্ট করেছিলেন। সকাল-সন্ধ্যার ইবাদত সূচনা থেকেই ছিল।

 

ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, রাসুল (সা.) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরাম মেরাজের ঘটনার আগেই নামাজ আদায় করতেন। তবে এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে অন্য কোনো নামাজ ফরজ ছিল কি না। কেউ কেউ বলেন,  সূর্য উদয় হওয়ার আগে ও অস্ত যাওয়ার আগে এক একটি নামাজ ফরজ ছিল।

 

বারা ইবনে আজেব (রা.) ও ইবনে আব্বাস (রা.) থেকেও এ ধরনের হাদিস বর্ণিত রয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, এই নামাজ ছিল প্রথম দিকে ফরজের অন্তর্ভুক্ত। (মুখতাসারুস সিরাহ, শেখ আবদুল্লাহ, পৃষ্ঠা ৮৮)

 

ইবনে হিশাম (রহ.) বর্ণনা করেছেন, (ইসলামের সূচনাকালে) রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম নামাজের সময় পাহাড়ে চলে যেতেন এবং গোপনে নামাজ আদায় করতেন। একবার আবু তালেব রাসুল (সা.) ও আলী (রা.)-কে নামাজ পড়তে দেখে ফেলেন। তিনি এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তাঁকে জানানোর পর তিনি বলেন, এই অভ্যাস অব্যাহত রেখো। (ইবনে হিশাম, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৪৭)

 

 

<h3> সালাত বা নামাজের জন্য পোশাক:</h3>

 

 

 আল্লাহর ইসলাম সহজ মোল্লার ইসলাম অনেক কঠিন,আমাদের ইসলাম এখন কাঁপড়ের মোড়কের মধ্যে চলে এসছে।জুব্বা,পাগড়ী,টুপিই একমাত্র ইসলামের পোশাক এমন ধারনা লালন করে কিছু মানুষ বাকীদেরকে যুগযুগ ধরে প্রতিপক্ষ হিসাবে নেতিবাচক ফতোয়া প্রদান করে মুসলমানদের নানা গোত্রে বিভক্ত করে ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছে।

 

পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হল সতর ঢাকা। আল্লাহ তাআলা বলেন <br>يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْءَاتِكُمْ وَرِيشًا <br>‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ (সূরা আ’রাফ ২৬)

আলোচ্য আয়াত থেকে বোঝা যায়, যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের উপরে ফুটে উঠে তা-ও সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েয পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান করা হারাম; সুতরাং নামাজে এধরণের পোশাক পরিধান করা যাবে না।আবার  বর্তমান প্রজন্মের অনেক ছেলে মেয়েরা  এমন   পোশাক পরে যা অত্যান্ত আটসাট এগুলোও পরিত্যাজ্য।

পক্ষান্তরে যে পোশাক পরিধানের পর সতরের আকৃতি পোশাকের উপরে ফুটে উঠে না, তা নামাজে পরিধান করা যাবে। তবে নামাজে কেবল সতর আবৃত করতেই নির্দেশ দেওয়া হয়নি, বরং সাজসজ্জার পোশাকও পরিধান করতে বলা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন<br>,يَا بَنِي آدَمَ خُذُواْ زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ <br>‘হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও।'(সূরা আ’রাফ ৩১)

<h3>   এখন আমরা পোশাকের কিছু শ্রেনী বিন্যাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি  </h3>

 

<h4>১) ফরজ পোশাক : </h4>

 

 এমন পোশাক, যা দ্বারা সতর ঢেকে যায়।

<h4> (২) মুস্তাহাব পোশাক :</h4>

 এমন পোশাক, যা রাসুল (সা.)-এর পোশাকের মতো বা তাঁর পোশাকের খুব কাছাকাছি অথবা সমকালীন নেককার লোকদের পোশাকের মতো হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলি।একেক সিলসিলা একেক রকম পোশাক তৈরী করে  সেটাকে ইসলামের পোশক  নাম  করন করে বাজার  জাত  করছে   এবং নিজেদের  মতের  লোকদের আকৃষ্ট করে ইসলামের নাম  করে তাদের বানানো মতকে উম্মতের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।আমরা এমন কোন হাদিস বিশ্বনবী সাল্লল্লাহু   আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এমন কোন নির্দেশনা  পাইনা যেখানে নবীজি সাহাবীদের উপর কোন বিশেষ ধরনের টুপি,পোশাক পাগড়ী চাপিয়ে দিয়েছেন  যেটা  পরতেই হবে।তাহলে আমাদের দেশের ইসলামের নেতারা তাদের অনুসারীদের উপর বিশেষ ধরনেরর টুপ,পিান্জাবী,পাগড়ী চাপিয়ে দেবার দলিল কৈ পাইল? 

<h4>(৩) মুবাহ ও জায়েজ পোশাক : </h4>

 এমন পোশাক, যার মধ্যে শরিয়তের সীমানার ভেতর থেকে সৌন্দর্যের প্রতি খেয়াল রাখা হয়।

<h4> (৪) মাকরুহ পোশাক :</h4>

 এমন পোশাক, যা পরিধান করার দ্বারা পরিধানকারীর অহংকার, প্রসিদ্ধি বা অন্যকে ছোট করা উদ্দেশ্য হয়।

<h4> (৫) হারাম পোশাক </h4>

: পুরুষ মহিলার মতো এবং মহিলা পুরুষের মতো পোশাক পরিধান করা হারাম পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। নাবালেগ ছেলে-মেয়ের বেলায়ও এ মাসআলা প্রযোজ্য। তবে যে এলাকায় নারী ও পুরুষের পোশাকের খুব বেশি পার্থক্য থাকে না, সেখানে পোশাক এক হওয়া হারামের মধ্যে গণ্য হবে না। তাদের পোশাকের মধ্যে পার্থক্য হবে হিজাব বা টুপি ইত্যাদি দ্বারা। (ফাতাওয়া শামি : ৫/২২৩, ফাতহুল বারি : ১০/৩৪৫, বুখারি : ২/৮৭৪, ইবনে মাজাহ : ১/৩৪৮, ২/২৯৯, নাইলুল আউতার : ৬/১২৬)

পুরুষ ও নারীর কাপড় পরিধানের উদ্দেশ্য সতর ঢাকা। যে কাপড় দ্বারা এ উদ্দেশ্য পূর্ণ হয় না, তা পরাও জায়েজ নয়। এমনিভাবে মুসলমানের জন্য অমুসলমানের ধর্মীয় পোশাক পরিধান করা নাজায়েজ। যেমন—হিন্দুদের মতো ধুতি ও গলায় পৈতা পরা, কপালে সিঁদুর বা চন্দন লাগানো, বৌদ্ধদের মতো গেরুয়া পোশাক পরিধান করা, খ্রিস্টানদের মতো ক্রুশ বা ক্রুশের বিকল্প কিছু পরিধান করা ইত্যাদি। প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড় পরিধান করা নিষিদ্ধ। পুরুষের জন্য অহংকারবশত টাখনুর নিচে জামা-পায়জামা পরিধান করা মাকরুহে তাহরিমি। অহংকারের নিয়ত না থাকলে মাকরুহে তানজিহি। জখম ইত্যাদি ওজরের কারণে টাখনুর নিচে কাপড় পরা জায়েজ। মহিলাদের জন্য পূর্ণ পা ঢেকে মাটি পর্যন্ত কাপড় ঝুলিয়ে পরা উত্তম। টুপি পরিধান করা সুন্নত। রাসুল (সা.) সাদা টুপি বেশি পরিধান করতেন। টুপি গোল, লম্বা যেকোনোটাই হতে পারে। নামাজ বা নামাজের বাইরে পাগড়ি পরিধান করা সুন্নত। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ৫/৩৩৩, আবু দাউদ : ২/২০৩, মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৫/১২১)

একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) কে প্রশ্ন করা হল, এক কাপড়ে নামাজ হবে কি? উত্তরে তিনি বললেন, তোমাদের প্রত্যেকের কি দু’খানা করে কাপড় রয়েছে। অতঃপর হযরত ওমর ফারুক (রা.) এর নিকট একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, আল্লাহপাক যখন তোমাদের সুযোগ বাড়িয়ে দেবেন তখন তোমরা বাড়ানো পোশাক ব্যবহার করো। এতে প্রতীয়মান হয় যে, এক ব্যক্তি একাধিক কাপড় পরিধান করেও নামাজ আদায় করতে পারবে।এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হযরত রাসূল (সা.) কে পোশাকের প্রথম সীমা অর্থাৎ ওয়াজিব সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। আর হযরত ওমর ফারুক রা. কে পোশাকের দ্বিতীয় সীমা, অর্থাৎ মুস্তাহাব সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। আবার এও হতে পারে যে রাসূল (সা.) এর নিকট পোশাকের দ্বিতীয় সীমা, অর্থাৎ মুস্তাহাব সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা বলেননি, যা হযরত ওমর ফারুক (রা.) বলেছেন। অর্থাৎ, একাধিক কাপড় পরিধানের বিষয়।যদি তিনি তা বলতেন, তাহলে তা শরীয়তের বিধান হয়ে যেত। এ অবস্থায় যার নিকট কাপড় নেই সে অন্তরে কষ্ট পেত। আর ১ কাপড়ে তার নামাজ পরিপূর্ণ হতো না। কারণ সে তার ধারণা অনুযায়ী পরিপূর্ণ পোশাকে নামাজ আদায় করছে না। আর হযরত ওমর ফারুক (রা.) অবগত ছিলেন যে, শরীয়ত অবতীর্ণ হওয়ার সময় শেষ ও সমাপ্ত হয়ে গেছে। তিনি এও অবগত ছিলেন যে, নামাজের মধ্যে পরিপূর্ণ পোশাক পরিধান করা মুস্তাহাব। এজন্য তিনি নামাযের মুস্তাহাব পোশাকের প্রদান করেছেন।  যত ধরনের পোশাক পরেই নামাজ  বা  সালাত পড়া হোক   সব  পোশাক   পাক পবিত্র  হতে হবে।

 

<h3>পবিত্রতা </h3>

 

সালাত বা নামাজের জন্য পূর্ব শর্ত হচ্ছে পবিত্রতা।সালাত কায়েমের জন্য যতটুকু পবিত্রতার প্রয়োজন,এখানে ততটুকুই আলোচনা করা হবে।

 

<h4>শরীরপাক </h4>

 

وَقَوْلِ اللهِ تَعَالَى (إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ

 فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ فَاطَّهَّرُوا جُنُبًا وَإِنْ كُنْتُمْ ۚإِلَى الْكَعْبَيْنِ)

 

<br>আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ (ওহে যারা ঈমান এনেছ!) তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমন্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত আর মাসেহ করে নিবে নিজেদের মস্তক এবং ধৌত করে নিবে, নিজেদের পা গ্রন্থি পর্যন্ত।যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ ৫/৬)

কোরআনের শব্দচয়ন সংক্ষিপ্ত কিন্ত এর ভাব ব্যাক্ষা গাভীরতা অনেক ব্যপক।” جُنُبًا” কোরআনের এই শব্দটার ভিতর অপবিত্রতার ব্যাপারে দুটি ব্যাক্ষা নিহিত আছে,১। বাহ্যিক অপবিত্রতা ২। অভ্যন্তরীন অপবিত্রতা।এবাদত কবুলের এবং আল্লাহর নিকট এবাদতের গ্রহন যোগ্যতা  ও পরকালে এর দ্বারা মুক্তির জন্য দুই ধরনের অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জন একান্ত অপরিহার্য়্য কর্তব্য।

 

<h3>১। বাহ্যিক অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা</h3>

 

অজু না থাকলে, গোসল ফরজ বা ওয়াজিব হলে,অজু ,গোসল,এবং তায়াম্মুমের মাধ্যমে যে অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জন করা হয় সেটা হচ্ছে বাহ্যিক পবিত্রতা।যেগুলো আমরা সাধারনতঃ করে থাকি।এই বাহ্যিক অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জনের ভিতরেও আমাদের অনেক গলদ রয়ে গেছে।অজু,গোসল এবং তায়াম্মুমের মাধ্যমে আমরা যখন অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জন করতে যায় তখন পবিত্রতা অর্জন করনে ওয়ালা বান্দার সাথে আল্লাহর একটা যোগাযোগ স্থাপন হয় যেমনঃ প্রতেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি ধোয়া বা মাসেহ করার সাথে সাথে বান্দা আল্লাহর প্রতি রুজু হয়ে দোয়া পড়ে আর বলে ও আল্লাহ এর মাধ্যমে আমার শরীর হতে গোনাহগুলো ঝরিয়ে আমাকে অপবিত্রতা হতে পবিত্র করে দাও।আমরা কি করি? এগুলো করার সময় আমাদের কয়জনের এ রকম কানেকশন হয়েছে?খুব কম,হাজারে ২/১ জন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।আমরা যেটা করি,  অজু গোসল বা তায়াম্মুমের সময় পাশে যদি কোন লোক থাকে তবে জীবনের যত গল্প আছে সেগুলো আমরা করতে থাকি।

বুজুর্গানে দ্বীন অজুতে বিভিন্ন অঙ্গ ধোয়ার সময় সেই দোয়াসমূহ পড়ার নিয়ম শিক্ষা দিয়েছেন, যাতে অজুর সময় ধ্যান খেয়াল ও মনোযোগ আল্লাহর প্রতি নিবিষ্ট থাকে।নিম্নে  এ   সম্পর্কে আলোচনা  করা হবে।

 

<h3>ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি </h3>

 

উপরে বর্ণিত আয়াতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে 

ওযুর ফরজ ৪টি নির্ধারিত সহয়েছে<br>

১। সমস্ত মোখ ভাল ভাবে ধৌত করা।<br>

২। হাতের কনুই সহ ভাল ভাবে ধৌত করা।<br>

৩। মাথা চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ্ করা।<br>

৪। দুই পায়ের টাকনু সহ ধৌত করা।<br>

এগুলো হচ্ছে ওযুর ফরজ। এগুলো থেকে যেকোনো একটি ছুটে গেলে অথবা এই স্থান গুলোর পশম পরিমাণ জায়গা শুকনা থাকলে ওযু হবে না।

 

<h3>যে যে অবস্থায় অযু ফরয হয়:</h3>

 

১. প্রত্যেক নামাযের ক্ষেত্রে অযু ফরয, সে নামায ফরয হউক বা ওয়াজিবই হউক, সুন্নাত বা নফল যা ই হউক।<br>

২. যানাযার নামাযে অযু করা ফরয<br>

৩. সিজদায়ে তিলাওয়াতের অযু করা ফরজ।<br>

 

<h3>যেসব অবস্থায় ওযু ওয়াজিব: </h3>

 

১. কাবা শরীফ তাওয়াফের ক্ষেত্রে।<br>

২. কুরআন স্পর্শ করার ক্ষেত্রে।<br>

 

<h3> যেসব কারণে অজু সুন্নত:</h3>

 

১. ঘুমানোর পূর্বে অযু করা সুন্নাত।<br>

২. গোসলের পূর্বে অযু করা সুন্নাত।<br>

 

ওযুর বেশ কিছু সুন্নত রয়েছে, যেগুলোর ব্যাপারে শরীয়তে তাগিদ এসেছে ও করলে সওয়াব হবে। এবং অধিকাংশ ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে। এমন বিষয়গুলোকে সুন্নাত বলা হয়।

 

<h3>অজুর সুন্নাত সমুহ </h3>

 

<br>১। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে অজু শুরু করা।<br>

 

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَبِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَرْمَلَةَ، عَنْ أَبِي ثِفَالٍ الْمُرِّيِّ، عَنْ رَبَاحِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ بْنِ حُوَيْطِبٍ، عَنْ جَدَّتِهِ، عَنْ أَبِيهَا، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ  لاَ وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرِ اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ

<br>রাবাহ ইবনু আবদির রহমান ইবনি আবী সুফিয়ান ইবনি হুআইত্বিব হতে তার দাদীর সূত্রে, তিনি তার পিতার (সাঈদ ইবনুযায়িদ) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি (সাঈদ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলেনি তার ওযু হয়নি। -হাসান। ইবনু মাজাহ– (৩৯৯)<br> 

 

أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْحَسَنِ الْمِقْسَمِيُّ، قَالَ أَنْبَأَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ حَدَّثَنِي شَيْبَةُ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَلِيٍّ، أَخْبَرَهُ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَلِيٌّ، أَنَّ الْحُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، قَالَ دَعَانِي أَبِي عَلِيٌّ بِوَضُوءٍ فَقَرَّبْتُهُ لَهُ فَبَدَأَ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَبْلَ أَنْ يُدْخِلَهُمَا فِي وَضُوئِهِ ثُمَّ مَضْمَضَ ثَلاَثًا وَاسْتَنْثَرَ ثَلاَثًا ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْمِرْفَقِ ثَلاَثًا ثُمَّ الْيُسْرَى كَذَلِكَ ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ مَسْحَةً وَاحِدَةً ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثَلاَثًا ثُمَّ الْيُسْرَى كَذَلِكَ ثُمَّ قَامَ قَائِمًا فَقَالَ نَاوِلْنِي فَنَاوَلْتُهُ الإِنَاءَ الَّذِي فِيهِ فَضْلُ وَضُوئِهِ فَشَرِبَ مِنْ فَضْلِ وَضُوئِهِ قَائِمًا فَعَجِبْتُ فَلَمَّا رَآنِي قَالَ لاَ تَعْجَبْ فَإِنِّي رَأَيْتُ أَبَاكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ مِثْلَ مَا رَأَيْتَنِي صَنَعْتُ يَقُولُ لِوُضُوئِهِ هَذَا وَشُرْبِ فَضْلِ وَضُوئِهِ قَائِمًا 

<br>

 

ইবরাহীম ইবনু হাসান মিকসামী (রহঃ) হুসায়ন ইবনু আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার পিতা আলী (রাঃ) আমাকে উযূর পানি আনতে বলেন। আমি তাঁর নিকট পানি এনে দিলাম। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে আরম্ভ করলেন। (প্রথমে) উযূর পানিতে হাত ঢুকাবার পূর্বে হাতের কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করলেন। এরপর তিন বার কুলি করেন ও তিন বার নাক ঝাড়েন। তারপর তিন বার মুখমণ্ডল ধৌত করেন এবং ডান হাত তিনবার কনুই পর্যন্ত ধৌত করলেন। অনুরূপভাবে বাম হাতে ধৌত করলেন এবং একবার মাথা মাসাহ করেন। তারপর টাখনু পর্যন্ত ডান পা তিনবার এবং অনুরূপভাবে বাম পা ধৌত করেন।

পরে সোজা হয়ে দাঁড়ালেন এবং বললেন, পানির পাত্রটা (আমার হাতে) দাও। আমি (তাঁর উযূর পর যে পানিটুকু পাত্রে ছিল তা সহ) পাত্রটি তাঁকে দিলাম। তিনি উযূর অবশিষ্ট পানিটুকু দাঁড়িয়ে পানি পান করলেন। আমি তাঁকে দাঁড়িয়ে পান করতে দেখে অবাক হলাম। তিনি আমার অবস্থা দেখে বললেনঃ অবাক হয়ো না। তুমি আমাকে যেমন করতে দেখলে, আমিও তোমার নানা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ করতে দেখেছি। আলী (রাঃ) তাঁর এ উযূ (ওজু/অজু/অযু) এবং অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করা সম্পর্কে বলছিলেন।

সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ হাঃ ১০৭।<br>

 

২. কবজি সহ উভয় হাত তিন বার ধোয়া।<br>

৩. কুলি করা।<br>

৪. নাকে পানি দেওয়া।<br>

৫. মেসওয়াক করা, অজু শুরুতে ।<br>

৬. সমস্ত- মাথা একবার মসেহ করা।<br>

৭. প্রত্যেক অঙ্গ তিন বার করে ধোয়া।<br>

৮. কান মসেহ করা।<br>

৯. হাতের আঙ্গুল সমুহ খেলাল করা।<br>

১০. পায়ের আঙ্গূল সমুহ খেলাল করা।<br>

১১. ডান দিক থেকে অজু শুরু করা।<br>

১২. ক্বোরানে বর্নিত ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।<br>

১৩. গর্দান মসেহ করা।<br>

১৪. দুই কান মসেহ করা।<br>

১৫. এক অঙ্গের পানি শুকানোর পুর্বেই অন্য অঙ্গ ধৌত করা।<br>

বি:দ্র: পুরুষের ঘন দাড়ি থাকলে মুখমন্ডল ধোয়ার পর ভিজা হাতে তিন বার দাড়ি খিলাল করতে হবে।

এছাড়া বাকি যা আছে সেগুলো মুস্তাহাব, যা করলে সওয়াব হবে এবং না করলে কোন গুনাহ হবে না।

 

<h3> ওযু নষ্ট হওয়ার কারণ সমুহ</h3>

 

১. প্রসাব বা পায়খানা করলে।<br>

২. পায়খানার রাস-া দিয়ে বায়ু বা অন্য কিছূ নির্গত হলে।<br>

৩. শরীরের কোন অংশ থেকে রক্ত বা পুজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।<br>

৪. নিদ্রাভিভুত হলে অর্থাৎ কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে কিংবা এমন কিছুতে ঠেস দিয়ে যে,তা সরিয়ে নিলে সে পড়ে যাবে।<br>

৫. মুখ ভরে বমি করলে।<br>

৬. নামাযের মধ্যে শব্দ করে হাসলে।<br>

৭. পাগল বা মাতাল হলে।<br>

৮. কারো নাক দিয়ে কোন কিছু ঢুকে মুখ দিয়ে বের হলে।<br>

৯. যদি মুখ দিয়ে থুথুর সাথে রক্ত বের হয় এবং থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমান বেশী বা সমান হয় তাহলে ওযু ভেঙ্গে যাবে।<br>

১০. স্ত্রীকে কাম ভাব সহকারে স্পর্শ করলে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।<br>

১১. লজ্জা স্থানে বিনা আবরনে হাত পড়লে ওযু ভঙ্গ হয়ে যাবে।<br>

 

<h4> অযুর ১৬টি মাকরূহ, অজু করার সময় এ কাজ সমুহ পরিহারের আপ্রান চেষ্টা করতে হবে</h4>

 

 ১।অযুর জন্য নাপাক   জায়গায় বসা,<br>

২।নাপাক জায়গায়  অযুর  পানি ফেলা <br>,

৩।অযুর    অঙ্গ সমূহ থেকে  লোটা  (বদনা)  ইত্যাদিতে  ফোঁটা  ফোঁটা  পানি     ফেলা,     (মুখ     ধোয়ার      সময়      পানিপূর্ণ অঞ্জলীতে    সাধারণত    মুখমন্ডল    হতে    পানির  ফোটা পড়ে। এ   ব্যাপারে    সতর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন)<br>

৪।কিবলার  দিকে  থুথু,  কফ,  কুলির  পানি   ইত্যাদি   নিক্ষেপ   করা,<br>

৫।প্রয়োজন  ছাড়া দুনিয়াবী   কথাবার্তা   বলা, <br>  

৬।   অতিরিক্ত   পানি  খরচ    করা    (আল্লামা    মুফতী    আমজাদ    আলী  আযমী      “বাহারে      শরীয়াত (সংগৃহীত)    ”১ম     খন্ডের     ৩০২-৩০৩    পৃষ্ঠায়  বর্ণনা   করেন:   নাকে  পানি   দেয়ার  সময়  আধা অঞ্জলী থেকে বেশি পানি ব্যবহার  করা অপচয়)<br>

৭।এত   কম  পানি    ব্যবহার   করা   যাতে  সুন্নাত  আদায় হয়  না। অতএব পানির  নল  এত   বেশি খোলাও উচিত নয় যাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি    পড়ে,      আবার     এত    সামান্য    পরিমাণ খোলাও উচিত নয়  যাতে সুন্নাত   আদায় না হয় বরং  মধ্যম  ভাবেই  পানির  নল   খোলা   উচিত।<br>

৮।মুখে  পানি  মারা,<br>

৯।  মুখে  পানি দেয়ার  সময় ফুঁক  দেয়া,<br>

১০।এক  হাতে  মুখ  ধোঁয়া কারণ এটা রাফেজী     ও   হিন্দুদের   রীতি, <br>   

১১।গলা    মাসেহ্  করা।  

১২।  বাম  হাতে  কুলী    অথবা  নাকে   পানি দেয়া। <br>    

১৩।ডান     হাতে        নাক     পরিষ্কার     করা,<br>

১৪।তিনবার    নতুন      পানি   দিয়ে   তিনবার   মাথা  মাসেহ্ করা,<br>

১৫। রোদের তাপে গরম করা পানি   দিয়ে   অযু   করা,<br>   

১৬   মুখ   ধোয়ার   সময়  উভয়  ঠোঁট  ও  উভয়  চক্ষু  দৃঢ়ভাবে  বন্ধ  রাখা।   যদি  ঠোঁট  ও  চোখের  কিছু  অংশও  শুষ্ক  থেকে  যায় তাহলে অযুই হবে না। অযুর প্রতিটি সুন্নাত বর্জন করা মাকরূহ  আর প্রতিটি  মাকরূহ  বর্জন  করা    সুন্নাত।     (বাহারে      শরীয়াত,    ১ম    খন্ড, ৩০০-৩০১ পৃষ্ঠা)<br>

 

<h3> ওজু শুরু করার দোয়া:</h3>

 

 

তাই বুজুর্গানে দ্বীন বলেছেন, ওজু শুরু করার সময় এই দোয়া পড়বে,

 

<br> بسم الله العلى العظيم والحمدلله على ملت الا سلام

                            

 <br>আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি, এবং সকল প্রশাংসা আল্লাহ তায়ালার, যিনি ইসলামের দৌলত প্রদান করেছেন।

 

<h3>কবজি ধোয়ার দোয়া: </h3>

 

এরপর হাতের কবজি ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br> 

 

       اللهم انى اسئلك اليه من والبركة واعوذبك من الشؤم والهلاكة

 

<br>আয় আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কল্যাণ ও প্রাচুর্যের প্রার্থনা করছি, এবং ধ্বংস ও অমঙ্গল থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।

 

<h3> কুলি করার দোয়া:</h3>

 

এরপর কুলি করার সময় এই দোয়া পড়াবে,<br> 

 

اللهم اعنى على تلا وة القران وذكرك وشكر وحسن عبادتك 

<br>আয় আল্লাহ, আমাকে কোরআন তেলাওয়াত আপনার জিকির ও শোকর এবং সুন্দর মতো আপনার ইবাদত করার তাওফিক দিন।

 

<h3>নাকে পানি দেওয়ার দোয়া: </h3>

 

নাকে পানি দেয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br>

 

اللهم ارحنى دائحة الجنة والا ترحنى دائحةالنار

<br>আয় আল্লাহ আমাকে জান্নাতের সুগন্ধি শোকান এবং জাহান্নামের দুর্গন্ধ শোকাবেন না।

 

<h3> চেহারা ধোয়ার দোয়া</h3>

:

চেহারা ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br>

 

اللهم بيّض وجهى يوم تبيّضُ وجوه وسودّ وجوه

 

<br>আয় আল্লাহ যে দিন কতক চেহারা উজ্জ্বল হবে আর কতক চেহারা মলিন হবে সেই দিন আপনি আমার চেহারা উজ্জ্বল রাখুন। 

কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,<br>

 

   يوم تبيض وجوه وسودّوجوهٌ

 

<br>‘সেদিন হাশরের ময়দানে কতক চেহারা উজ্জ্বল হবে আর কতক চেহারা হবে মলিন।’ (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১০৬) আমালে সালেহ করেছে এমন সকল মুমিনের চেহারা আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রগে ঝলমলে উজ্জ্বল হবে, অন্যদিকে কাফের মুশরিকদের চেহারা হবে মলিন, কালিমাখা যুক্ত, অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,</br> 

 

 وجوه يومئذناضبرةه الى ربها نا ظرةه وجوه يومئذباسرة تظن ان يفعل بها فاقرة- 

<br>কেয়ামতের দিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, তারা তাদের প্রতি পালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে, আর সে দিন কিছু চেহারা থাকবে উদাস, তারা ধারনা করবে, তাদের সঙ্গে কঠিন আচরণ করা হবে, (সূরা: কিয়ামা, আয়াত: ২২/২৫)। 

আর এক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন,<br> 

                 وجوه يو مئذ مسفرة ضاحكة مستبشرة- وجوه يو مئذ عليها غبرة- ترهقها قترة- اولئك هم الكفرة الفجرة 

 

<br>‘এবং বহু মুখমণ্ডল সে দিন হবে উজ্জ্বল সহাসা, প্রফল, এবং বহু মুখমণ্ডল সে দিন হবে ধুলো মলিন, তাদেরকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে, তারাই হবে কাফের পাপিষ্টের দল, (সূরা: আবাসা, আয়াত: ৩৮-৪২)।

কেয়ামতের দিন অঙ্গসমুহ উজ্জ্বল হবে:

হাশরের ময়দানে মানুষের চেহারার উজ্জ্বলতা কিংবা মলিনতা দেখেই বোঝা যাবে তার ঠিকানা কোথায় এবং কোথায় যেতে হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় নিয়মিত অজু করেছে, আল্লাহ তায়ালা তাকে তার চেহারা কপাল হাত পাসহ সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ঝলমলে  উজ্জ্বল করে তুলবেন, দূর থেকে তার অঙ্গ প্রতঙ্গের উজ্জ্বলতা দেখে লোকজন বুঝতে পারবে, লোকটি নামাজের উদ্দেশ্যে নিয়মিত অজু করত। (বুখারি, মুসলিম, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ)।

অন্য এক হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কেয়ামতের দিন আমার উম্মতের লোকজনের চেহারা উজ্জ্বল সাদা থাকবে। তাদের হাত পাও সাদা, চমকাতে থাকবে, কেয়ামত অবশ্যই সঙ্গটিত হবে, সেদিন চেহারা উজ্জ্বলতা হবে, আল্লাহ তায়ালার দরবারে মর্যাদাশীল হওয়ার আলামত, আর চেহারায় মলিনতা আল্লাহ তায়ালার দরবারে প্রখ্যাত হওয়ার আলামত, এই কারণেই বুজুর্গানে দ্বীন অজুর মধ্যে চেহারা ধোয়ার সময় এই দোয়া করতে বলেছেন, আয় আল্লাহ যে দিন কিছু চেহারা উজ্জ্বল হবে আর কিছু চেহারা মলিন হবে সেদিন আপনি আমার চেহারা উজ্জ্বল করে দিয়েন।

 

<h3>ডান হাত ধোয়ার দোয়া: </h3>

 

এরপর কনুইসহ ডান হাত ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br>

 

   اللهم اعطنى كتابى بيمينى وحاسبنى حسابايسيرا

 

<br>আয় আল্লাহ আমার আমলনামা আমার ডান হাতে দিন, এবং আমার হিসেব সহজ করে দিন, এই দোয়াটি কোরআন শরিফের সেই আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। যেখানে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন,<br>

                                               

                                   

 فأماّمن اوتى كتابه بيمينه- فسوف يحاسب حسابايسيرا- وينقلب الى اهله مسرورا

 

<br>যার আমল নামা ডান হাতে দেয়া হবে, তার থেকে সহজ হিসেব নেয়া হবে, তারপর সে তার পরিজনের মাঝে সানন্দে ফিরে যাবে, (সূরা: ইনশিকাক, আয়াত: ৭-৯)। 

অর্থাৎ তার থেকে মামুলি হিসেব নিয়ে বলা হবে, যাও সোজা জান্নাতে চলে যাও, অন্যদিকে যার থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খু হিসেব নেয়া হবে, তাকে বলা হবে, তোমার সকল কর্মকাণ্ড অনুপুঙ্খ হিসেব দাও, এই প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে,<br>

 

من نو قش الحساب عذب

 

<br>যার থেকে অনুপুঙ্খ হিসেব নেয়া হবে, সে আজাবে নিপতিত হবে। (বুখারি মুসলিম, আবু দাউদ, আহমদ)।

যে ব্যক্তির পুরোপুরি হিসেব নিকেশ নেয়া হবে, তাকে এক এক করে প্রত্যেক কাজের হিসেব দিতে হবে। এমন ব্যক্তির সর্বশেষ পরিনাম হলো জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়া। আল্লাহ তায়ালা আমদের সকলকে জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করুন। ঈমানের দৌলত এমন মূল্যবান যে, যখন আল্লাহ তায়ালা এই দৌলত কাউকে দান করেন, তখন তিনি তার সঙ্গে সদয় আচরণ করেন। যদি তার সামগ্রিক জীবন আল্লাহ তায়ালা আনুগত্যের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়, যদি তার থেকে একটু আধটু সগিরা হয়েও যায় তবু আল্লাহ তায়ালা তার হিসেব কিতাবের ক্ষেত্রে পুঙ্খানু পুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না। তার সঙ্গে বরং সহজ মামুলি আচরন করা হবে, তাকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার দরবারে হাজির করা হবে। এরপর তার আমলনামা অত্যন্ত হালকা ও সহজভাবে নিবিক্ষন করা হবে। তারপর আল্লাহ তায়ালা তার দয়া ও অনুগ্রহের বহি:প্রকাশ ঘটাবেন। তাকে জান্নাতে পাঠিয়ে দেবেন। 

আর যেই ব্যক্তির সামগ্রিক জীবন গুনাহ খাতার মধ্যে অতিবাহিত হয় এবং আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে বেখবর, একদম ভুলে বসে আছে আল্লাহ তায়ালাকে, রোজ হাশরে আল্লাহ পাকের দরবারে হাজির হওয়ার অনুভূতই যার মাঝে নেই এমন ব্যক্তির কাছ থেকে অক্ষরে অক্ষরে হিসেব নেয়া হবে। আর যার থেকে এভাবে অনুপুঙ্খ হিসেব নেয়া হবে, অবশ্যই তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। তাই বুজুর্গানে দ্বিন বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা সমীপে এই প্রার্থনা কর, আয় আল্লাহ ডান হাতে আমার আমলনামা দিন এবং আমার থেকে সহজ হিসেব নিন। আরবি দোয়া মুখস্থ না থাকলে, মাতৃভাষায় দোয়া করলেও চলবে।

 

<h3> বাম হাত ধোয়ার দোয়া</h3>

:

বাম হাত ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br> 

 

اللهم لا تعطنى كتابى بشما لى ولا من وراء ظهرى  

 

<br>আয় আল্লাহ আমার আমলনামা আমার বাম হাতে এবং পেছন দিকে দিয়েন না। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ঈমানদার ও নেক বান্দাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে, আর কাফের ও বদকারদের আমলনামা পেছন দিক থেকে বাম হাতে দেয়া হবে। এই কারণেই এই দোয়া করা উচিৎ যে আয় আল্লাহ, আমার আমলনামা আমার পেছন দিক দিয়ে বাম হাতে দিয়েন না, আমি যেন কাফের ও বদকারদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যাই।

 

<h3> মাথা মাসেহ করার দোয়া:</h3>

 

বুজুর্গানে দ্বীন মাথা মাসেহ করার সময় এই দোয়া পড়তে বলেছেন,<br> 

           اللهم اظللنى تحت ظل عرشك يوم لاظل الا ظل عرشك

 

<br>আয় আল্লাহ! আপনি আমাকে ওই দিন আপনার আরশের ছায়া দিন, যে দিন আপনার আরশের ব্যতিত কোনো ছায়া থাকবে না। মুসলমানই জানে, হাশরের ময়দানে যখন লোকজন একত্র হবে, তখন সেখানে ভীষন উত্তাপ থাকবে, সূর্য একদম কাছে চলে আসবে। হাদিস শরিফে এসেছে, মানুষ সে দিন নিজের নিজ ঘামের হাবুডুবু খাতে থাকবে, কারো হাঁটু পর্যন্ত ঘাম থাকবে, কারো থাকবে কোমর পর্যন্ত আবার কারো থাকবে বুক পর্যন্ত। কেউ আবার ঠোঁট পর্যন্ত ঘামে হাবুডুবু খেতে থাকবে, এভাবে মানুষ নিজ নিজ ঘামে ডুবে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এই হাশর দিবসের উত্তাপ্ততা থেকে হেফাজত করুন। এই কারণেই বুজুর্গানে দ্বীন এই দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন, আয় আল্লাহ! যে দিন আপনার আরশের ছায়া ব্যতিত কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন আপনি আপনার আরশের ছায়ায় আমাকে আশ্রয় দেবেন।

 

<h3>গর্দান মাসেহ করার দোয়া: </h3>

 

 গর্দান মাসেহ করার সময় এই দোয়া করা উচিত,<br>

 

<br>اللهم اعتق رقبتى من النار

 

<br>আয় আল্লাহ আমার গর্দান জাহান্নামের আগুন থেকে নিরাপদ করে দিন।

 

<h3>ডান পা ধোয়ার দোয়া: </h3>

 

ডান পা ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br>

 

     اللهم ثبت قدمى على الصراط يوم تضل فيه الا قدام

 

<br>আয় আল্লাহ! সেদিন পা পুলসিরাতের ওপর দৃঢ়পদ রাখুন, যেদিন লোকজনের পা পিছলে যাবে। পুলসিরাত হলো জাহান্নামের উপর স্থাপিত একটি সরু পাতলা পুল, এই পুল পেরিয়ে মানুষ জান্নাতে যাবে, যে ব্যক্তি জাহান্নামী হবে, তার পা সেই পুলের ওপর পদস্খলিত হয়ে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।

 

<h3>বাম পা ধোয়ার দোয়া: </h3>

 

এর পর বাম পা ধোয়ার সময় এই দোয়া পড়বে,<br>

 

   اللهم اجعل ذنبى مغفوراً وسعيى مشكورا وتجارتى لن تبورا

 

<br>আয় আল্লাহ, আমার গুনাহ মাফ করে দিন। আমি যা কিছু করেছি, আপনি আপনার অনুগ্রহে তার প্রতিদান দিন এবং আমি যে ব্যবসায় করেছি, অর্থাৎ যেই জীবন আমি অতিবাহিত করে এসেছি, আসলেই যা ছিল ব্যবসায়, এর ফলাফল আখেরাতে প্রকাশ পাবেই। সুতরাং আয় আল্লাহ, আমার জীবনের বেচাবিক্রিকে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। বরং এই ব্যবসায় আমাকে লাভবান করে আখেরাতে এদদ্বারা উপকৃত করুন।

মোটকথা হলো, বুজুর্গানে দ্বীনের কথামত ওজুর মধ্যে উল্লিখিত দোয়াসমূহ নিয়মিত করা উচিত। এ দোয়াগুলো অত্যন্ত উপকারী ও কার্যকর। রাসূল সালাহু আলাইহি ওয়াসালাম ওজুর সময় ওইসব দোয়া পড়েছেন। বিভিন্ন সময় ওইসব দোয়ার আমল করেছেন। এসবের একটি দোয়াও যদি আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন, তা হলেই ইনশাআলাহ্! সকল বিপদের অবসান ঘটবে।

উল্লিখিত দোয়াসমূহ আরবিতে মুখস্থ করে নেয়াই উত্তম। তবে ততক্ষন পর্যন্ত দোয়াগুলো মাতৃ ভাষায় করবে, এর ফলে আল্লাহ তায়ালা বাহ্যিক পবিত্রতার পাশাপাশি অন্তর্জগত ও পবিত্র করে দেবেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এসব দোয়ার বরকত দান করুন, এবং আমাদের সবাইকে দোয়াসমূহের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন।এ ছাড়াও  অজু করার শুরুতে, অজু করার সময় এবং শেষে ৪টি দোয়া পড়ার জন্য হাদিসের নির্দেশনা রয়েছে। এতে অনেক ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো হলো-

অজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা- <br>

 

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم

 

<br>অর্থ : পরম করুনাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

অজু করার সময় এ দোয়াটি পড়তে থাকাঃ<br>

 

اَللَّخُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ

 

 رِزْقِىْ

 

<br>(নাসাঈ)

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।’

 অজুর শেষে কালেমার সাক্ষ্য ও উপকারিতা<br>

 

 

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ

مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ   

 

 

<br>অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)

উপকারিতা : হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে; ওই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)

অতপর এ দোয়াটি পড়া-<br>

 

 اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ التَّوَّابِينَ ، وَاجْعَلْنِي مِنْ الْمُتَطَهِّرِينَ

 

 

<br>অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উল্লেখিত দোয়াগুলো অনেক ফজিলত পূর্ণ। যা অজুকারীকে পবিত্র ও নেককার বান্দায় পরিণত করে দেয়। যার জন্য জান্নাতের সব দরজা উন্মুক্ত থাকে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, একান্ত মনোযোগের সঙ্গে সুন্নাতের অনুসরণে সব সময় অজু অবস্থায় থাকা। অজুর ফজিলত লাভে যথাযথভাবে অজু করা। হাদিসে ঘোষিত অজুর ফজিলত ও উপকারিতাগুলো অর্জন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় অজু অবস্থায় থাকার তাওফিক দান করুন। পবিত্রতা অবলম্বনকারী ও তাওবাহকারী হিসেবে কবুল করুন। দুনিয়াতে উত্তম রিজিক, মৃত্যুর আগে গোনাহ মাফ এবং পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে কবুল করুন।


আপনার মতামত দিন