মুসলমানদের প্রত্যেকটা কাজ কারবার লেনদেন ইত্যাদিতে নিয়ত একটা অপরিহার্য্য বিষয়।নিয়তের ক্ষেত্র হলো অন্তর। ফলে নিয়ত করতে হবে অন্তর দ্বারা। অন্তরের সংকল্প ছাড়া শুধু মুখে নিয়ত করলে যথেষ্ট হবে না।নিয়ত আরবি শব্দ এর অর্থ ইচ্ছা, উদ্দেশ্য, মনোবাঞ্ছা, প্রত্যয়, সংকল্প ইত্যাদি। পরিভাষায় আল্লাহ তাআলার আনুগত্য, সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তাঁর নির্দেশ পালনার্থে কোনো কাজ করার দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলে। নিয়ত দুটি কারণে করতে হয় এক. অভ্যাস থেকে ইবাদতকে পার্থক্য করার জন্য। দুই. এক ইবাদতকে অন্য ইবাদত থেকে পার্থক্য করার জন্য। কেননা ইবাদত বিভিন্ন ধরনের। যেমন ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, নফল। সুতরাং নিয়তের মাধ্যমেই পার্থক্য হবে সে ফরজের নিয়ত করেছে, নাকি ওয়াজিবের, নাকি সুন্নাতের। আমাদের উপমহাদেশে নামাজ রোজার ক্ষেত্রে মুখে মুখে নওয়াইতুয়ান আরবী বাক্য দ্বারা যে নিয়ত শুরু করে সেটা কোরআন হাদিসে কোথাও নেই।তাহলে আমাদের সাধারণ জনগণ এটা পেলো কোথায়? কি এর ইতিহাস এটাই আমাদের প্রবন্ধের মূল আলোচনা।মুহাম্মদ বিন কাশিমের ভারত অভিযানের পূর্বেও উপমহাদেশে আরব্য বানিজ্যিক কাফেলাদের হাত ধরে কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহন করেছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম এসেছে আরবী ফার্সী ভাষাভাষি লোকদের মাধ্যমে ।তারা যখন নওমুসলিমদের দ্বীন শিক্ষা দিত তখন স্থানীয় দোভাষীরাও তাদের অনেক ভাষা বুঝতনা,অঙ্গভঙ্গীর মাধ্যমে অনেক কাজ সম্পন্ন হত।এবাদতের ক্ষেত্রে ও এমন অনেক শব্দগত বিষয় রয়েছে যা ভাষাগত ভাবেই প্রচলিত হয়েছে যেমন,নামাজ,রোজা কে বলে সালাত,সিয়াম।নামাজ বা সালাত,রোজা বা সিয়াম কিভাবে পালন করতে হয় সেটা তারা সরেজমিনে দেখিয়ে শিখাতে পেরেছে কিন্ত নিয়ত যে সংকল্পের নাম এবং অন্তর দ্বারা করতে হয় এটা তারা তখন বোঝাতে না পেরে এরকম গদভাধা একটা আরবী নিয়ত শিখিয়ে দেই।উপমহাদেশে ইসলামের প্রাথমিক যুগে এগুলোর উপর তেমন গবেষনার প্রয়োজন পড়েনি ।তার কারন ইসলামে যে আনুগত্যের কথা বলা হয়েছে এবং ইমামদের অনুস্বরনের যে বিষয় বলা হয়েছে সে গুলো তারা বিনা বাক্যে মেনে নিয়েছিলো তার জন্য তখন এতটা খোজা হয়নি।আস্তে আস্তে মানুষ যখন ইসলামের সাথে সাথে পরিচিত হলো কিতাব পুস্তক ব্যপকহারে মানুষের হাতে আসলো মানুষ যখন চিন্তা গবেষনার মাধ্যমে আরবি ভাষা এবং কোরআন হাদিসের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করলো যাচাই বাছাই ক্ষমতা যখন মানুষ করতে শিখলো তখন বুঝতে পারলো যে এভাবের নিয়ত কোরআন হাদিসের কোন শব্দ না এটা প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে তখন মানুষকে শিখানো হয়েছিলো।নিয়ত সম্পর্কে মানুষ যেহেতু এখন বোধগম্য হয়েছে সুতরাং এখন আর মৌখিক ঐ নিয়ত করা যাবেনা।তাহলে এতদিন যারা মৌখিক নিয়ত করে এসছে তারা কি কোন অপরাধ করেছে ? না মোটেও অপরাধ করেনি,নিয়ত সম্পর্কে তাদের বোধগম্যে যতটুকু এসেছে ততটুকুর মা ধ্যমেই তারা নিয়ত করেছে এখন বোঝার পর যেহেতু তারা মনের সংকল্পের মাধ্যমেই নিয়ত করছে সুতরাং আল্লাহ তাদের পুর্বের মৌখিক নিয়ত সমুহকে অন্তরের সংল্পের নিয়ত দ্বারা পরিবর্তন করে কবুল করে নিন।
আপনার মতামত দিন