Aroplan of Murad

আকাশে নয়, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বদরপুর গ্রামের ১৫ বছর বয়সী কিশোর মুরাদ হোসেনের তৈরি ‘উড়োজাহাজ’ ভাসল পানিতে। আজ বুধবার সকালে মহান বিজয় দিবসে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পুকুরে এটি ভাসিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন।

মুরাদের ‘উড়োজাহাজ’ পানিতে ভাসছে শুনে শত শত নারী-পুরুষ শিশু কিশোর উপজেলা পরিষদে সকাল থেকে এসে ভিড় করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদরপুর গ্রামের রিকশাচালক নজরুল ইসলামের ছেলে কিশোর মুরাদ। আড়াই মাস ধরে এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে এই ‘উড়োজাহাজ’ তৈরি করে সে। ইঞ্জিন, ককপিট, সিঁড়ি, দরজা, জানালা, বসার আসন—সবই আছে এতে। এটি তৈরি করতে ককসিট, স্টিলের রড, ব্যাটারি, কাঠসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে মুরাদ। ‘উড়োজাহাজটির’ ভেতরে থাকা ইঞ্জিন চালু করা হলে আসল উড়োজাহাজের মতো শব্দও শোনা যায়। তবে এটাকে উড়ানো যায় না বলে মুরাদের ইচ্ছা ছিল, এটা সে পানিতেই ভাসাবে। তার সেই ইচ্ছা আনুষ্ঠানিকভাবে পূরণ করে সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দিলেন ইউএনও। এ জন্য তিনি মুরাদের গ্রাম থেকে ট্রাকযোগে উপজেলা পরিষদে আনেন।

স্থানীয়রা জানান, মুরাদ তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় মুরাদ। সে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। অভাব আর অনটনের কারণে মুরাদ পড়ালেখায় বেশি দূর এগোতে পারেনি। তার বাবা নজরুল একজন রিকশাচালক। মা জাহানারা বেগম বাক প্রতিবন্ধী। লেখাপড়া করতে না পেরে বদরপুর গ্রামে মুরাদ বৈদ্যুতিক কাজ করছে। সেখান থেকেই নতুন কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা তার মাথায় আসে। এর আগে সে হেলিকপ্টার, লঞ্চ তৈরি করে তা পানিতে ভাসিয়ে এলাকার মানুষকে আনন্দ দিয়েছে। আর তা দেখে অনেকেই উৎসাহ দেয় মুরাদকে। এতে করে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে তার উৎসাহ বেড়ে যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের কাজে মুরাদকে এবং পাশাপাশি মানুষকে উৎসাহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ‘উড়োজাহাজটি’ পানিতে ভাসানো হয়েছে।

মুরাদ বলে, ‘আমার এ উড়োজাহাজ সবাইকে দেখানোর কোনো সুযোগ ছিল না। এ সুযোগ করে দেওয়ায় আমি খুব খুশি।

ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন বলেন, ‘মুরাদের প্রতিভার উন্মেষ ঘটাতে তাকে বিজ্ঞান ক্লাবের সদস্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তার উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও বিকশিত করবে।’


আপনার মতামত দিন