icc

ক্রিকেট সারা বিশ্বে একটি ভদ্র ও জনপ্রিয় খেলা আর শুধুমাত্র ভারতে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। ২০০৯ সালে পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ব্যবহার করে কৌশলগত ভাবে পাকিস্তানকে হোমক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করে ভারত এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দীহীন একচ্ছত্র ক্রিকেট বানিজ্যিক রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। লাভের ষোলকলা পূর্ণ করার জন্য অষ্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে ফুসলিয়ে রাজী করিয়ে অন্যান্য ক্রিকেট খেলোরে দেশগুলির আর্থিক ও অন্যান্য দূর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে ভারত আইসিসির মালিক বনে যায়। 

 

ভারতের জাতীয় আয়ের ভাল একটি অংশ প্রত্যক্ষ ভাবে তাদের ক্রিকেট বানিজ্য থেকেই আসে আর ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে বিশাল বানিজ্যিক সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে তারা যার আর্থিক মূল্য সাধারনের চিন্তার অনেক বাইরে।

 

ভারত, ক্রিকেট নামক এই বিশাল একচ্ছত্র বানিজ্যিক সম্রাজ্যে তারা কোন অংশীদার দেখতে চায় না। পাকিস্তান ক্রিকেটকে একঘরে করার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত তাদের ক্রিকেট ব্যবসা যথেষ্ঠ নিরাপদেই ছিল।

 

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট উত্থানে ভারত আজ ভীত সন্ত্রস্ত। তাদের লাভের ঝুলিতে বাঘের থাবা পরার আশঙ্কায় তারা আজ আতঙ্কিত। এশিয়ার ক্রিকেট ভারত থেকে বাংলাদেশে বিকেন্দ্রীকরণ হয়ে যেতে পারে যে কোন সময়, এই দুশ্চিন্তায় আজ তাদের ঘুম নেই। 

 

সেই পথ বন্ধ করতেই গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে আইসিসিকে ব্যবহার করে প্রকাশ্য দূনীতির মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতকে জিতিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় দেয়। যে দিন শুধু ভারতই নিষ্ঠুর হাঁসি হাঁসতে পেরেছিল আর বাংলাদেশকে সমবেদনা জানিয়ে কেঁদেছিল ক্রিকেট ও সারাবিশ্ব। পদত্যাগ করেছিল ICC'র প্রেসিডেন্টও।

 

সেই পরাজয়ের শোক কে শক্তিতে পরিনত করে যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আরো দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। ক্রিকেট পরাশক্তি পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিন আফ্রিকাকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে একের পর এক সিরিজ জিতে নিচ্ছে। তখনি বাংলাদেশকে বিতর্কিত করার জন্য ভারতেরই আরেক সহচর তিন মোড়লের এক মোড়ল অষ্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশে তাদের নির্ধারিত সফর বাতিল করে, এমনি কি একই অজুহাতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত যুব বিশ্বকাপেও তাদের দল পাঠায়নি। 

 

অথচ বাংলাদেশে খেলতে আসা বিদেশী দলগুলিকে বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় অনেক কঠোর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দেয়া হয়।

 

ক্রিকেট ব্যবসায়িরা এত কুটচাল সত্বেও থামাতে পারেনি বাংলাদেশকে। সাম্প্রতি অনুষ্ঠিত এশিয়াকাপ থেকে আমিরাত, আফগান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে বিদায় দিয়ে ভারতের সাথে ফাইনাল খেলে এশিয়ায় নিজেদের সমকক্ষতার জানান দেয় টাইগারগন। এবার আরো ভীত হয় ক্রিকেট ব্যবসায়ীগন।

 

bowler

 

তারা নতুন ফাঁদ পাতে বাংলাদেশকে আটকানোর জন্য। তারা স্বপ্ন দেখতে থাকে টি২০ বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার পর্বেই বাদ পরবে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের ঘোরেই বাংলাদেশ বনাম ওমানের খেলার দিন ভারতীয় বোলার আশিন টুইটারে টুইট করেন “আজ যদি বাংলাদেশ জিতে যায় খুশি হবে একটি দেশ, আর যদি হেরে যায় খুশি হবে সারা বিশ্ব”। যাই হোক আশিনের সেই স্বপ্ন সত্যি হয়নি বরং দুঃস্বপ্নের মাধ্যমে ইতি ঘটেছে। কিন্তু সফল হয়েছে ICC. অর্থাৎ Indian Cheating Council (ICC) এবার আম্পায়ারের ঘাড়ে বসে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলায় চাকিং এর অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে সবচেয়ে গতি সম্পন্ন পেস বোলার তাসকিন আহমেদ ও সফল স্পিনার আরাফাত সানির উপর। বোলার দু-জন এ্যাকশন পরীক্ষা দেয় ভারতেই, নিরীক্ষকও ভারতেরই এবং ফলাফলও অনুমেয় । সাধারনত রিপোর্ট প্রকাশ করতে ২০-২৮ দিন সময় লাগলেও তরিগরি করে অষ্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের খেলার আগের দিনই বোলার দু-জনকে নিষিদ্ধ করে রিপোর্ট প্রকাশ করে সেই ক্রিকেট ব্যবসায়ীগন। পরের খেলাটিই হবে ভারতের সাথে। পরীক্ষার সময় ৩-৪মিনিটে ৯ বাউন্স ডেলিভারী দিতে বলা হয় তাসকিনকে যা কোন খেলায় কখনো সম্ভব নয়। এমনকি আয়ারল্যান্ডের খেলার দিন তাসকিন কোন বাউন্সই দেয় নাই। নিয়ম অনুযায়ী খেলায় যেধরনের ডেলিভারীতে সন্দেহ করা হয় সেগুলির উপরই রিপোর্ট দিতে হবে। আর স্টক ডেলিভারির ক্ষেত্রে শুধু সতর্ক করা হবে। ক্রিকেট ব্যবসায়ীগন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গুটি উল্টিয়ে দিলেন। হয়ত এবারের মত বাংলাদশকে সফল ভাবে ফাঁদে আটকাতে পেরেছে ক্রিকেট ব্যবসায়ী তিন মোড়ল। 

 

পরের শিকার হয়ত ক্রিকেট ব্যবসায়ীদের ত্রাস জাগানো বোলার মোস্তাফিজ অথবা অন্য কেউ। খলের তো আর ছলের অভাব হয় না।

 

Harbhajan

 

এবার শুধু দেখার পালা কি ব্যবস্থা নেয় বিসিবি। বাংলাদেশের বিরুদ্বে এধরনের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বিসিবির আইনের আশ্রয় নেয়া উচিত। এই ক্রিকেট ব্যবসায়ীদের কর্মকান্ডে স্থব্দ সমগ্রক্রিকেট বিশ্ব। সারাবিশ্বের সকল ক্রিকেট প্রেমিদের মাঝে একটা স্লোগানই ক্রমে ক্রমে দানা বাঁধছে- “ক্রিকেট ভদ্র লোকের খেলা। হঠাও ভারত, বাঁচাও ক্রিকেট”।

 

sumit kumar

 

বিদ্র:: সকল ক্রিকেট প্রেমি, ICC ও এর ভারতীয় কর্তা ব্যাক্তিদের বাংলাদেশ বিরোধী মনোভাব কে উস্কে দিতে উপরের ছবিটি তৈরী করেছে ”সুমিত কুমার” নামের এক ভারতীয় নাগরিক যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশি প্রত্রিকাগুলিতে প্রকাশিত হয়েছে। অথচ ভারতীয় মিডিয়া গুলি ছবিটির জন্য বাংলাদেশকে নিন্দা জানিয়ে একের পর এক টিভি শো করেছে। অনেকেই ধারনা করছেন এই ছবিটির জন্যই তাসিকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

লেখক পরিচিতি
এম, এইচ, মিনহাজ
আমি বিভিন্ন বাংলা/ইংরেজী ব্লগের একজন অনিয়মিত এবং সখের ব্লগার। তবে নিয়মিত লেখার ইচ্ছে থাকলেও অনিয়মিত ভাবেই পাঠকদের বিরক্ত করে থাকি। আমার লেখার বিষয়বস্তু- যা মনে আসে তাই। কারও কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার জন্য লিখি না। কেউ আমার লেখা পছন্দ করলে খুশি হই তবে অপছন্দ করলেও লেখালেখি বন্ধ করার কোন অবকাশ নেই, কারন আমি একান্ত সখের বশেই লেখালেখি করি।
আমার ব্লগ সমুহ:

আপনার মতামত দিন