shaj-gojগরম বলে তো আর নিত্যদিনের কাজকর্ম ফেলে বাড়ি বসে থাকার সুযোগ নেই। অফিসের কাজ তো আছেই, কাজ সামলানোর পরও আজ আছে বিয়ে বাড়ি, তো কাল বন্ধুর বাড়ি পার্টি। ছুটির দিনে দুপুরবেলায় কফিশপের আড্ডাও কি বাদ যায়! এদিকে একটু মেকআপ নিয়েছেন তো গরমে ঘেমে নেয়ে সাজের দফারফা! কিন্তু গরমকালে কি মেকআপ বাক্সটা আলমারিতে তুলে রাখবেন?

অতিরিক্ত প্রসাধনী শুধু গরমে নয় কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। গরমে ভারী মেকআপ যেমন নেওয়া যাবে না তেমনি ক্রিম জাতীয় প্রসাধনী থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে। জরুরি বিষয় হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, ত্বক পরিষ্কার রাখা। বেসনের সঙ্গে একটু হলুদ পাউডার এবং মুলতানী মাটি মিশিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে গরমে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে।

গরমে ত্বক সুন্দর এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কিছু কিছু প্রসাধনী অতি প্রয়োজনীয়। এসব প্রসাধনী ব্যবহার করেই গরমে আপনি আপনার ত্বক সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে পারবেন। গরমে সাজের আগে পরের এই সব টুকিটাকি এখানে তুলে ধরা হলো।

 

ফেইসওয়াশ : গরমে ত্বকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা মাথায় রেখে ব্যাগে সব সময় একটি ফেইসওয়াশ রাখতে পারেন। ব্যবহার করতে পারেন গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান অথবা ক্লিনজার। তবে গরমে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার। আবার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেইসওয়াশও হবে আলাদা।

তৈলাক্ত ত্বকে লেবু বা কমলা সমৃদ্ধ ফেইসওয়াশ ভালো কাজ করে। এতে মুখের তেলতেলে ভাব কমে যায়। স্ক্রাব বা দানাদার ফেইসওয়াশও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযোগী। তবে ব্রণের সমস্যা থাকলে দানাদার ফেইসওয়াশ ব্যবহার না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে নিম ফেইসওয়াশ ভালো। ফ্রুট ফেইসওয়াশ স্বাভাবিক ত্বকের উপযোগী। শুষ্ক ত্বকে আলমন্ড তেলসমৃদ্ধ ফেইসওয়াশ কার্যকর।

 

সানস্ক্রিন : রোদের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বক কালো হয়ে যায়। তাই গরমের দিনে খুবই প্রয়োজনীয় সানস্ক্রিন। বাইরে বের হতে হলে রোদ থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। বিশেষ করে চোখের নিচের নমনীয় ত্বকের জন্য মেডিকেটেড সানস্ক্রিন এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তেলবিহীন সানস্ক্রিনই ব্যবহার করতে হবে।

বাজারে অনেক রকমের সানব্লক ও সানস্ক্রিন পাবেন। ক্রিম, জেল, লোশন, স্প্রে, পাউডার সব রকমই আছে। তবে ত্বক তৈলাক্ত হলে সানব্লক লোশন বেছে নিন কিংবা সানস্ক্রিন পাউডার। আর শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম। হাতে ও পায়ে সানস্ক্রিন জেল ব্যবহার করতে পারেন।

 

ওয়েট টিস্যু : মুখ মোছার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় ওয়েট টিস্যু। এতে ল্যাভেন্ডার নামক সুগন্ধি থাকে, যা ব্যবহার করলে মুখ সতেজ ও সজীব থাকে। বাইরে সব সময় পানি দিয়ে মুখ ধোয়া সম্ভব নয় বলে ওয়েট টিস্যু বেশ কার্যকরী। ওয়েট টিস্যু সহজেই ত্বকের তেল, ময়লা মুছে ফেলে। সাধারণত সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর শেষ হয়ে যায়। তাই এর চেয়ে বেশি সময় বাইরে থাকলে ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে আবার সানস্ক্রিন লাগান।

 

ক্লিনজিং মিল্ক : ক্লিনজিং মিল্ক ব্যবহারে ত্বকের ধুলা ময়লা তেল উঠে আসে। এতে ত্বক পরিষ্কারের সঙ্গে ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় থাকে। অল্প একটু তুলা নিয়ে তাতে ক্লিনজিং মিল্ক নিন। আলতো করে মুখ মুছে ফেলুন। এরপর প্রয়োজনমতো সানস্ক্রিন বা মেকআপ লাগান। শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বক পরিষ্কার করতে ব্যবহার করুন ক্লিনজিং জেল। তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য ক্লিনজিং লোশন।

 

টোনার : ত্বকের অতিরিক্ত তেল, মরা কোষ, ধুলা-ময়লা, মেকআপ দূর করে টোনার। সঠিকভাবে টোনিং করলে লোমকূপের আকার স্বাভাবিক ও পরিষ্কার থাকে। ত্বকের সজীবতা বজায় রাখার পাশাপাশি মুখের ক্লান্ত ভাবও দূর হয় এতে। ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণও রোধ করে টোনার।

ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুখ মোছার পর তুলায় টোনার নিয়ে মুখ ভালোভাবে মুছে ফেলুন। টোনারের প্রধান উপাদান অ্যালকোহল। বেশি অ্যালকোহল ত্বক শুষ্ক করে দেয়। তাই শুষ্ক ত্বকের জন্য কম অ্যালকোহলযুক্ত টোনার বেছে নিন। স্পর্শকাতর ত্বকে টোনার ব্যবহার না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। তুলার বলে গোলাপজল নিয়ে পুরো মুখ মুছে ফেলুন। এটাও টোনার হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে।

 

ব্লটিং পেপার : ত্বক তৈলাক্ত হলে মেকআপের কিছুক্ষণ পরই মুখের টি-জোন বা কপাল, নাক ও নাকের নিচে, ঠোঁটের নিচে থুতনির কাছে তেল জমে। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে হাতব্যাগে ব্লটিং পেপার রাখুন। এটি অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। ত্বকের যে অংশে তেল জমেছে সেখানে ব্লটিং পেপার চেপে ধরুন। তারপর হালকাভাবে কমপ্যাক্ট পাউডার বুলিয়ে নিন। এতে দীর্ঘক্ষণ মেকআপ ভালো থাকবে।


আপনার মতামত দিন