images usaভিসা পাওয়া কঠিন, নানা রকম টেস্ট দিতে হয়, খরচ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে এমন নানা বাধার কথা বলেন শিক্ষার্থীরা। তবে একটু সময় নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করলে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়াটা বেশ সহজ। এমন মনে করেন ঢাকার আমেরিকান সেন্টারের স্টুডেন্ট কাউন্সিলররা। আর পরবর্তী সেশন অর্থাৎ ২০১৪ সালে আবেদন করতে চাইলে গ্র্যাজুয়েট ও আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের এখনই প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এ নিয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন আমেরিকান সেন্টারের সিনিয়র স্টুডেন্ট কাউন্সিলর আরেফিন জাহান। ‘যে কেউ আমাদের সেন্টারে এসে পরামর্শ পেতে পারে। ইংরেজিতে ভালো না, ফলাফল তেমন ভালো না বা টেস্ট প্রস্তুতি নেই, এমন সমস্যাগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে। যার যা সমস্যা সে অনুযায়ী কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে তার একটা দিকনির্দেশনা আমরা দিয়ে দিই। তবে আবেদন থেকে শুরু করে অন্য সব কাজ কিন্তু শিক্ষার্থীকেই করতে হবে। আমরা শুধু তাকে সঠিক পথটা দেখিয়ে দিতে পারি।’ বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে চাই—এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রস্তুতি শুরু করে দিন। এক বছর সময় হাতে রাখা উচিত। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসের সেশনে ভর্তি হন, তবে জানুয়ারি মাসেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে পাঁচটি ধাপ অনুসরণ করতে পারেন।

সুযোগগুলো যাচাই করুন
শুরুতেই ভেবে দেখুন কী ধরনের ডিগ্রি নিতে চান আপনি। আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতা কেমন। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ভর্তির জন্য এইচএসসি বা এ লেভেল পর্যন্ত পড়া শেষ করতে হবে। আর মাস্টার্স পর্যায়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজন ব্যাচেলরস ডিগ্রি। আমেরিকান সেন্টারে ভর্তি-প্রক্রিয়া নিয়ে সেমিনার করা হয়। এতে যে কেউ অংশ নিতে পারেন। প্রতি সোমবার আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের এবং প্রতি মঙ্গলবার গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা চলে। সময় বেলা তিনটা থেকে চারটা।

আবেদন করুন
এই পর্যায়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে। পছন্দের বিষয়, পড়া ও থাকা-খাওয়ার খরচ, স্কলারশিপ, ক্যাম্পাস—এসব দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন। এ ক্ষেত্রে অ্যাক্রিডিশন পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ভালো। অ্যাক্রিডিশন পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা পেতে পারেন এই ওয়েবসাইটে: www.chea.org

পড়ার খরচ নিয়ে ভাবুন
১৫-২০টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিন। ভর্তির প্রয়োজনীয় যোগ্যতা আপনার আছে কি না, তা যাচাই করে নিন। আর এ তালিকাটি আপনার পরামর্শককে দেখিয়ে নিন। পড়ার খরচ সম্পর্কেও খোঁজ নিন। আপনি নিজে কত টাকা জোগাড় করতে পারবেন, কতটা ফান্ডিং বা স্কলারশিপ থেকে পাবেন, তা নিয়ে পরামর্শকের সঙ্গে আলোচনা করুন।

স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করুন
এবার আপনাকে টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। ইংরেজির দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য টোয়েফল সবার জন্যই লাগবে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আইএলটিএস স্কোরও গ্রহণ করে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ভর্তির জন্য আরও চাই এসএটি স্কোর। গ্র্যাজুয়েটদের জন্য লাগবে জিআরই বা জিম্যাট। এসব পরীক্ষার জন্য পাসপোর্ট থাকা প্রয়োজন। আগেই পাসপোর্ট করিয়ে রাখুন। সময়মতো পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করুন। জেনে নিন আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়সীমার মধ্যে টেস্ট স্কোর হাতে পাবেন কি না। সেই অনুযায়ী পরীক্ষার তারিখ ঠিক করুন। টেস্ট স্কোর পেয়ে যাওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন
টেস্ট স্কোর পেয়ে যাওয়ার পর এবার ভর্তির পালা। ছয় বা তার বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করুন। জেনে নিন আর কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন ভর্তির জন্য। সাধারণত ফিসহ অ্যাপ্লিকেশন, অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, টেস্ট স্কোর, পারসোনাল স্টেটমেন্ট, রিকমেন্ডেশন লেটার, ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হয় ভর্তির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী ভিন্নতা থাকতে পারে। তাই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে রাখুন আগেই। সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় পাঠান আপনার আবেদন প্যাকেজ। সাধারণত সেপ্টেম্বরে ভর্তির জন্য জানুয়ারি মাসের মধ্যে আবেদন পাঠাতে হয়। আর এর তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হতে পারে। ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে লেটার অব অ্যাকসেপটেন্স এবং আই-টোয়েন্টি পাঠাবে। ভিসা পাওয়ার জন্য এই কাগজগুলো থাকতেই হবে। এসব পর্যায়েই আপনি আমেরিকান সেন্টারের সহযোগিতা পেতে পারেন। আগে থেকে সাক্ষাতের সময় ঠিক করে এখানকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করতে পারেন। এ ছাড়া এখানকার অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেও নানা সাহায্য পেতে পারেন। ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরাও ফোনে এখান থেকে পরামর্শ পেতে পারেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট এবং যশোরে তাদের কর্নার আছে, সেখান থেকেও সাহায্য পেতে পারেন। যোগাযোগ: প্লট-১, প্রগতি সরণি, ব্লক-জে, বারিধারা, ঢাকা।
ফোন: ৮৮৫৫০০ বর্ধিত ২৮৩৬ ওয়েবসাইট: www.educationusa.info
চট্টগ্রাম: ৩১৬২২৯৪৬, সিলেট: ৮২১৭১৭১৯৩, যশোর: ০৪২১৬৫০১৪

ভিসা পাওয়ার জন্য
আমেরিকান সেন্টারের স্টুডেন্ট কাউন্সিলরদের মতে, আমেরিকায় ভিসা পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে বোঝাতে হবে যে সত্যিই তিনি পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান। কনস্যুলার অফিসারকে এমন ধারণা দিতে হবে যে আপনার প্রধান উদ্দেশ্য পড়াশোনা করা। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন তার সম্পর্কে ভালোমতো খোঁজখবর নিন। পড়ার বিষয় সম্পর্কেও নানা তথ্য জেনে রাখুন। এটা ভিসা পেতে আপনাকে সাহায্য করবে। পড়ার খরচ জোগাড়ের জন্য আপনার নির্দিষ্ট ব্যবস্থা আছে এটা ভিসা অফিসারকে জানাতে হবে। এ সম্পর্কে আরও তথ্য জেনে নিতে পারেন এডুকেশন ইউএস-এর অফিস থেকে।

ইএমকে সেন্টার
সম্প্রতি ঢাকার ধানমন্ডিতে চালু হয়েছে এডওয়ার্ড এম কেনেডি (ইএমকে) সেন্টার। আমেরিকান সেন্টার ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে অংশীদারিত্বে চালু হয়েছে এটি। এর পরিচালক এম কে আরেফ জানালেন, ঢাকার এই অংশের শিক্ষার্থীদের আরও সহজে সেবা দেওয়া এবং নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করার জন্য এর শুরু হয়েছে। এতে আছে পাঠাগার, মিলনায়তন, ক্যাফে, লাউঞ্জ ইত্যাদি। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নানা তথ্য দেওয়ার জন্য একজন স্টুডেন্ট কাউন্সিলর এখানে নিয়মিত বসেন। তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করেও পরামর্শ নিতে পারেন। ঠিকানা: মাইডাস সেন্টার, সড়ক-২৭ (পুরাতন), ধানমন্ডি, ঢাকা। ফোন: ০১৯৪২২২৩৩৩৩।

সৌজন্যে: প্রথম আলো।


মন্তব্যসমুহ  
জাজাফী
+1 # জাজাফী 2013-12-26 17:48
লেখাটি বেশ উপকারী। আশা করি সবার বেশ কাজে লাগবে।
প্রতিউত্তর
আপনার মতামত দিন