অভিশপ্ত শয়তান আল্লাহর কাছ হতে বিশেষ কিছু ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছে যেমন,সে মানুষের শিরা উপশিরাতে প্রবেশ করতে পারবে।সে কিয়ামত দিবস পযর্ন্ত বেঁচে থাকবে।সে মুহুর্তের মধ্যে পৃথিবী পরিভ্রমন করতে পারবে।আল্লাহ মানুষের মধ্যে এমন একটি গুরুত্বপূর্ন জিনিষ দিয়েছেন, যার জন্য তাঁকে ফেরেস্তা হতে আলাদা করা হয়েছে এবং পুরুস্কার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।আল্লাহর নিকট ফেরেস্তাদের অনেকগুলো আবেদনের ভিতর একটা আবেদন এমন ছিলো যে,তারা আল্লাহকে বলেছিলো হে আল্লাহ মানুষ তোমার গুনগান করে এই জন্য তাদেরকে জান্নাত দিবেন,আমরাও তো মানুষের চাইতে তোমার তাছবীহ গুনগান বেশি করি সুতরাং আমাদের জন্য কি পুরুস্কার দিবেন? আল্লাহ জবাবে বলেছিলেন,যাদেরকে আমি নিজ হাতে তৈরী করেছি আর যারা আমার কুন ফায়াকুন বলা শব্দ হতে সৃষ্টি হয়ে গেছে, মানুষের সাথে তাদের পুরুস্কার এক হয় কি করে।ফেরেস্তাদের বিবেকের সাথে নফস দেয়া হয়নি,মানুষকে নফস ও বিবেক দেয়া হয়েছে।জীন জাতির ভিতরেও নফস এবং বিবেক আছে এই জন্য মানুষ আর জীনের হিসাব হবে।আর আল্লাহ নফসকে নিয়ন্ত্রনের জন্য দিয়েছেন বিবেক।পশু পাখির ভিতর ও নফস আছে এই জন্য তাদের বংশ বৃদ্ধি হয় এবং তাদের ভিতর মারামারি হাউখাও হয় কিন্তু তাদের ভিতর কোন বিবেক দেয়া হয়নি এই জন্য তাদের কোন পুরুস্কার তিরোস্কার ও নেই।তবে দুনিয়াতে কোন শিং অলা ছাগল যদি শিংছাড়া ছাগলকে গুতা দেয় তবে বিচার দিবসে আল্লাহ দুনিয়ার শিং বিহীন ছাগলটাকে তখন শিং দান করে প্রতিশোধের মাধ্যমে বিচার কাজ শেষ করে বলবেন তোমরা মাটি হয়ে যাও।শয়তানের যে ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছেন, এই ক্ষমতা বলে শয়তান প্রথমেই মানুষের নফসে আক্রমন করে।শয়তান তার লক্ষ্যটাকে মানুষের সামনে মানুষের জন্য লাভবান,তৃপ্তিদায়ক, আকর্ষনীয় করে তোলে।শয়তানের এই আক্রমন কিন্ত সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারেনা।শয়তানের কাজ হচ্ছে মানুষকে আল্লাহর মৌলিক বিধান গুলো হতে বিমুখ করা।এখন আমরা শয়তানের ধোকাবাজীর কিছু বর্নণা করবো।মানুষকে তার বিশ্বাস তৌহীদের ভিতর শিরক মিশ্রন করা যেমন,অমুক বোযর্গ মারা গেছে কবরে তার কাছে কিছু পাওয়া যাবে এমন ধারনাকে শয়তান সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে বদ্ধমুল করে দিতে প্ররোচনা দেয়।পীর বাবা,গাছ,পাথর,কচ্ছপ ইত্যাদীর ভিতর আল্লাহ ঐশী শক্তি রেখেছে এগুলোর দ্বারা উপকৃত হওয়া যাবে এমন ধারনাকে শয়তান মানুষের মনে সৃষ্টি করে এবং কিছু মানবের বেশধারী শয়তানের প্ররোচনাকে সত্য বলে মানুষকে ঐ কাজ করতে উৎসাহ দেয়। আল্লাহর উলুহিয়াতের সাথে এই রকম নানা ধরনের শিরককে শয়তান মানুষের সামনে সঠিক বলে উপস্থাপন করে।আর মানুষ নফসের খাহেশে পড়ে এই সমস্ত শিরকগুলো করতে থাকে।সুদ,ঘুষ খাওয়াকে উন্নতির এবং সুখের বড় সোপান হিসাবে শয়তান মানুষের নফসের ভিতর কুমন্ত্রনা দেয়।শয়তান নফসকে বলে তুই ঘুষ দিয়ে চাকুরী নিয়েছিস অতএব তোর ঘুষ খেলে কিছু হবেনা এই রকম ধারনা শয়তান দিয়ে থাকে।টাকা আছে মানুষকে দিয়ে সুদ খা,আরে মরনের আগে তওবা করিস আল্লাহ সব মাফ করে দিবেএ রকম ভাবে শয়তান সুদ খেতে মানুষকে প্ররোচনা দেয়।যাকাত না দেয়াকে অর্থনৈতিক উন্নতি বলে যাকাত দাতার মনে ধারনা যোগায়,যাকাতকে পুরাতন জীবন ব্যবস্থা বলে ধারনা দেয়।আগে মানুষ গরীব ছিলো সে জন্য যাকাত দিতে হতো এখন কেউ ঐ রকম গরীব নেই সুতরাং এখন যাকাত দেবার দরকার নেই মানুষকে এমন ধারনা দেয়া।যাকাত দিলেতো প্রজেক্ট বাড়ানো যাবেনা,অমুক করা যাবেনা তমুক করা যাবেনা এ রকম নানান ধরনের কুমন্ত্রনা শয়তান মানুষের নফসে দিয়ে থাকে।রাস্তা দিয়ে সুন্দরী রুপবতী একটি নারী যাচ্ছে,শয়তান তাকে মানুষের সামনে আরো মোহনীয় করে তোলে আর নফসকে বলে দেখ কত সুন্দর,আরে একবার তাকানো যায়,আরে এটাও তো আল্লাহর নিয়ামত একটু দেখলে কিছু হবেনা,একটু তৌবা করলেই ক্ষমা হয়ে যাবে,মেয়েদেরকে বলে ওহ তুমি খুব সুন্দর তোমার চেহারা যদি কেউ না ই দেখলো তাহলে তোর লাভ হলো কি? পাতলা কাঁপড় পর,আটোসাটো পোশাক পর যাতে তোকে মানায়,আর বোরকা হলো পুরাতন যুগের রীতি,তার পরেও যদি বোরকা পরে তবে শয়তান বলে ডিজাইন করে আটো সাটো বোরকা দিয়ে পর্দা করো সমস্যা কি?শয়তান চায় নারীরা বেহায়া হয়ে চলুক আর তাকে দেখে পুরুষদের ভিতর জিনার আগ্রহ বাড়ুক।একটা বিষয় মনে রাখতে হবে,চোর কিন্ত গরীব মানুষের ঘরে চুরি করতে যায়না, কারণ চোর জানে গরীবের ঘরে মূল্যবান কোন সম্পদ পাওয়া যাবেনা।সম্পদশালীর ঘরেই কিন্ত চোর চুরি করার চেষ্টা করে।শয়তান ও অনুরুপ যারা ভালো পথে চলে,ভালো পথে চলার চেষ্টা করে,মানুষকে ভালো পথে আসার কথা বলে শয়তান কিন্ত তার নফসে সাড়াশী আক্রমন চালাই।তাদেরকে বলে আরে এটা তেমন একটা বড় পাঁপ না তৌবা করলেই মাফ হয়ে যাবে, এইভাবে শয়তান প্ররোচনা দিয়ে পাঁপ কাজে লিপ্ত করাই।সম্প্রতি সময়ে শয়তান কৌশলে আলেম উলামাদের ধোকা দেয়া শুরু করেছে, শয়তান কখনো মুসলমানদের ঐক্য চায়না।কারণ সে জানে মুসলমানরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায় তাহলে শয়তানকে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা।সেজন্য শয়তান মুসলিম জাতিসত্বার ভিতর অনৈক্য বিভেদ সৃষ্টির জন্য আলেমদের ভিতর প্রবেশ করেছে।ওয়াজ নসিহতের সময় শয়তান বলে অমুকের বিরুদ্ধে অমুক বল তমুক বল তাহলে তুই বড় হবি,তোর সুনাম বাড়বে,তুই নেতা হতে পারবি,আর ঐ বক্তাকে বলে তোর বিরুদ্ধে অমুক ওয়াজের ভিতর অমুক বক্তা সমালোচনা করেছে তুই ও তার বিরুদ্ধে বেশি করে সমালোচনা না করলে তোর মার্কেট নষ্ট হয়ে যাবে।রাজনৈতিক আলেমদের বলে তোরা পীর মুরিদের বিরুদ্ধে বলতে থাক,আর পীর মুরিদদের বলে তোরা ওদের গালি দিতে থাক।এইভাবে শয়তান আজ আলেম উলামাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে গোটা মুসলিম মিল্লাতকে অনৈক্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।কয়েকটা আলেমকে শয়তান তাদের নফসে এমন কাঁমড় দিয়ে নফসের সাথে লেগে আছে যে তারা এই চার বা পাঁচজন কখনো এক হবেনা।একজন বলে অমুকের এই ঠিক নেই,আর একজন বলে অমুকের ঐ ঠিক নেই,আবার যদি বলা হয় হুজুর সব দলের বড় নেতা আপনি হবেন, তখন বলে দ্যাখেন যদি পারেন আমার আপত্তি নেই,আর যদি বলা হয় হুজুর আপনার পদটি পাঁচ নম্বরে তখন বলবে না না অমুকের আকিদা ঠিক নেই ওদের সাথে ঐক্য হবেনা হ্যান ত্যান ইত্যাদী।তাহলে কি বুঝা গেলো? ক্ষমতা পাওয়ার না পেলে ঐক্য নেই।আর শয়তান যুগ যুগ এই পুঁজিটাকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম উম্মাহর মাঝে অনৈক্যের পাঁকা দেয়াল তৈরী করেছে।আজ আমরা মুখে আল্লাহর সন্তষ্টির কথা বললেও অন্তরে আমাদের নফসের খাহেশাত।আল্লাহর সন্তষ্টিই যদি তোমাদের উদ্দেশ্য হয় তবে ক্ষমতার কথা চিন্তা না করে এক হয়ে যাও।আল্লাহর পক্ষ হতে যা পাও তাতেই সন্তুষ্ট থাকো।শয়তানের খপ্পরে পড়ে কু নফসের আকাংখা পুরন করোনা।
আপনার মতামত দিন